পুষ্টিবিদের মতে এই ৫ খাবারেই শরীরে বাড়ে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা

কোলেস্টেরল বাড়লে তা হার্টের রক্তনালীতে জমে। তখন রক্ত চলাচল পর্যাপ্ত হয় না। হতে পারে হার্ট অ্যাটাক। এই পরিস্থিতি রুখতে শরীরে বাড়াতে হবে ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল। কোন খাবার খেলে এই উপাদান বাড়ে? আসুন জানা যাক।

কোলেস্টেরলের নাম উঠলেই লোকে ভয় পান। এই বুঝি সমস্যা ঘিরে ধরল! তবে সব লিপিড খারাপ নয়। এইচডিএল কোলেস্টরল শরীরের জন্য ভালো। এই উপাদান শরীরে বেশি থাকলে হার্টের অসুখ থাকে দূরে। তাই এইচডিএল বাড়ানোর জন্য কিছু খাবার আপনাকে নিয়মিত খেতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন হার্টের রোগে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। মূলত হচ্ছে করোনারি আর্টারি ডিজিজ। এই অসুখে হার্টের করোনারি ধমনিতে জমে প্লাক। আর সেই প্লাক জমে থাকার কারণে রক্ত চলাচল ঠিকমতো হয় না। এই কারণে অঙ্গটির কাজে ব্যাঘাত ঘটে। এমনকী হতে পারে হার্ট অ্যাটাক।

হৃৎপিণ্ডে প্লাক মূলত তৈরি করে খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল। তবে দেখা গিয়েছে যে শরীরে ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বাড়লে এলডিএল কমে। তাই এই উপাদান বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা আপনাকে করতেই হবে।

এই বিষয়টি সম্পর্কে কলকাতার বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ ঈশানী গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, এই বিষয়ে আমাদের অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। এইচডিএল বাড়াতে ব্যায়াম হল মাস্ট। পাশাপাশি কিছু খাবার রয়েছে যা এই উপাদান শরীরে বৃদ্ধি করে। আসুন জানা যাক।

ওটস হল ধন্বন্তরি
​ওটস এখন অনেকেই খান। এই খাবার ওজন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। তবে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে ওটস খেলে ভালো কোলেস্টেরল বাড়ে। তাই এই খাবার খেতে বলা হয়। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। আর সেই ফাইবারের মান খুবই ভালো। তাই শরীরে বাড়ে এইচডিএল। আর দেখা গিয়েছে যে খারাপ কোলেস্টেরল শরীরে গ্রহণ করতে বাধা দেয় এই খাবার। তাই হার্টের রোগ অনেকটাই দূরে থাকে।

মসুর ডালে কিস্তিমাত

ঈশানী গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ডাল দারুণ এক খাবার। এই খাবারে রয়েছে প্রোটিনের সমাহার। এছাড়়াও এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। এই ফাইবার কিন্তু শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ডাল খেলে তাই ওজন বাড়ে না। এছাড়া দেখা গিয়েছে যে মসুর ডাল খেলে এইচডিএএল কোলেস্টেরল অনেকটা পরিমাণে বাড়ে। তাই এই খাবার পাতে রাখতে হবে। রোজ কিছুটা পরিমাণে হলেও ডাল খান। তবে ইউরিক অ্যাসিড থাকলে একবার চিকিৎসক বা ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিন।

সবুজ শাক-পাতাই আপনার কালো ঘোড়া

বাঙালিরা শাক খেতে ভালোবাসেন। শাকপাতা বহু গুণে সমৃদ্ধ। খনিজ, ভিটামিনে ভরপুর। তাই রোগ প্রতিরোধের দারুণ কার্যকরী এই খাবার। এছাড়া সবুজ শাকপাতা বাইল অ্যাসিডকে বাইন্ড করে। আর শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরলকে ঠেলে বের করে দেয়। পাশাপাশি ভালো কোলেস্টেরল বাড়ানোর কাজেও এই খাদ্যগুলি সিদ্ধহস্ত। তাই আপনাকে খাবারের প্লেটে কেলে, পালংশাক রাখতে হবে। তবেই হার্টের অসুখ থাকবে দূরে। তাই এইসব নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে ডায়েটের দিকে নজর ফেরান।

অ্যান অ্যাপেল আ ডে
​আমাদের হাতের কাছে অন্যতম সেরা খাবার হল আপেল। কথায় আছে একটি আপেল রোজ খেলে রোগ কাছে আসে না। এই বাক্যটি একদম সত্যি। তাই আপনাকে রোজ একটি আপেল খেতে হবে। দেখা গিয়েছে এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সেই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর সুস্থ রাখার কাজে ভীষণই কার্যকরী। এছাড়া এতে আছে ফাইবার। এই ফাইবার খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে এইচডিএল বাড়ায়। তাই আপেল খেলে চিন্তার কারণ নেই বললেই চলে।

আমন্ড ও ওয়ালনাটেই রোগ পালাবে
ঈশানী গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, এই দুই বাদামজাতীয় খাবার কিন্তু শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। এতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এই উপাদান ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বাড়াতে পারে খুব সহজে। এমনকী দেখা গিয়েছে এই বাদাম খেলে হার্টের অসুখও কাছে আসে না। তাই এই খাবার নিয়মিত খান। তবেই ভালো থাকবেন।

বিদ্র: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।