বাড়িতে যারা শখের বসে ছোট ছোট টবে আলু চাষ করতে চান এখনই টবে আলু লাগানোর সঠিক সময়। ছাদে বা বারান্দায় কনটেইনারে প্লাস্টিকের বালতি তে বাগান করা অনেক সহজ। নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বাগান করে অনেক বেশি ফলন পাওয়া যায়। সারের অপচয় হয় না।
আগাছা , ছত্রাক এবং পোকা মাকড় থেকে দূরে থাকা যায়। ছাদে, বারান্দায় বা যে কোন জায়গায় স্থাপন করা যায়।কনটেইনারে আলু চাষ করলে তা আহরণ করা যায় খুবই সহজে। গর্ত করে বা কোদাল দিয়ে খনন করে ফসল নষ্ট হবে না । শুধুমাত্র কনটেইনারে উপুড় করে ফেললেই হল।
পিপি/কনটেইনার নির্বাচন ও প্রস্ততি:
৪০-৫০ লিটার বা ২ থেকে ৩ ফুট উচ্চতার যে কোন রঙের, পানির কনটেইনার, পানির বালতি বা যে কোন ফুড গ্রেডের কনটেইনার বাগান করার জন্য ব্যাবহার করা যেতে পারে। অতিরিক্ত পানি নির্গমনের জন্য প্রতিটি কনটেইনারে নিচে ৩/৪ ইঞ্চি সাইজের ৫ -৬ টি ছিদ্র করে নিতে হবে। কনটেইনারে আলু চাষের জন্য ভালো পানি নিষ্কাশন ব্যাবস্থা থাকা খুবই জরুরি। তারপর কনটেইনার টি ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
বীজ সংগ্রহ ও চারা রোপণ:
আলুর বীজ দুইভাবে সংগ্রহ করা যেতে পারে। বীজ থেকে এবং আলুর কাটিং থেকে। বীজের চারা সরাসরি নার্সারি থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে আর কাটিং চারা পেতে পারেন বিগত বছরের আলু থেকে। পুরনো আলু থেকে ছোট ছোট অঙ্কুর বের হয়। এই অঙ্কুরিত বীজ রিডোমিল পাউডারের সাথে মিশিয়ে রোপন করতে হবে।অনেক সময় আলু থেকে চারা করলে ভাল ফলন পাওয়া যায় না, বিধায় টিস্যু কালচার করা আলুর বীজ থেকে চারা করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়। তবে এখন সব বীজ এর দোকানে আলু বীজ পাওয়া যাচ্ছে।
বপন পদ্ধতি:
কন্টেইনারের নিচের দিকে আনুমানিক ৬ ইঞ্চি পরিমাণ স্থান ঝুরঝুরে কম্পোষ্ট,ফসফেট,পটাশ মিশ্রিত মাটি দিয়ে ভরতে হবে, আপনি চাইলে কয়লা,নারকেলের ছোবড়া বা কচুরিপানা ব্যাবহার করতে পারেন। এতে করে মাটিতে আদ্রতা বজায় থাকবে এবং মাটি থাকবে ঝুরঝুরে। অঙ্কুর গুলো নিরাপদ দূরত্বে রেখে রোপণ করুন। অঙ্কুরের নিচের অংশটি মাটি দিয়ে ঢেকে দিন। আর বীজ থেকে গাছ উৎপাদন করলে বীজ গুলোকে মাটির উপর ছিটিয়ে দিন। মাটিগুলো একটু ভেজা রাখা ভালো তবে খেয়াল রাখবেন আলুগুলো যেন পচে না যায়।
অতিরিক্ত মাটি যোগ করুন :
গাছগুলো ৬-৮ ইঞ্চি পর্যন্ত দীর্ঘ হলে গাছ গুলোর ৩ ভাগের ২ অংশ আরো এক লেয়ার কম্পোষ্ট মিশ্রিত মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এভাবে কন্টেইনারের উপর পর্যন্ত গাছগুলোকে ধাপে ধাপে কম্পোষ্ট মিশ্রিত মাটি দিয়ে ঢেকে দিয়ে পর্যাপ্ত পানি সেচন করতে হবে ( মানে গাছ যত বড় হবে, মাটির লেয়ারও তত উঁচুতে উঠবে)।
ফসল তোলা :
প্রায় ১০ সপ্তাহ পর আলু গাছের পাতাগুলো হলুদ হওয়া শুরু করলে আলু তোলার জন্য পুরোপুরি উপযোগী হয়ে পড়বে। প্রথমে উপরের আলুগুলো সাবধানে বের করে আনতে হবে, এরপর পুরো উলটে ফেলে সমস্ত মাটি বের করে ফেলতে হবে। মাটি থেকে আলুগুলো আলাদা করে ফেলতে হবে।
ব্যারেল বা কনটেইনারে আলু চাষের আরো কিছু টিপস :
প্রথম বছর ফসল তোলার পর কিছু আলু বীজ হিসেবে পরবর্তী বছরের জন্য রেখে দেয়া যেতে পারে। শিম গাছের ঝোপ আলু চাষাবাদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী। মাটির পরিবর্তে কাঠের গুড়া বা নারিকেলের ভুষি ব্যাবহার করতে পারেন। এই টিপস গুলোতে সফল না হলে অন্য কনটেইনারে বীজে উৎপাদিত গাছ লাগিয়েও পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।