শুধু খামার করে নয় বর্তমানে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেকই সবজির আবাদ করে। অল্প পুজি খাতিয়ে অল্প সময়ে অধিক মুনাফা লাভ করা যায়। এই রকমই একটি লাভজনক সবজি হোল পটল। পটল একটি গ্রীষ্মকালীন জনপ্রিয় সবজি। পটল Cucurbitaceae পরিবারের সবজি যার ইংরেজি নাম Pointed gourd এবং বৈজ্ঞানিক নাম Trichosanthes dioica। পটল উৎপাদনের জন্য সব জেলাই মোটামুটি উপযোগী। তবে বৃহত্তর রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, কুষ্টিয়া ও যশোর জেলায় ব্যাপকভাবে পটলের চাষ করা হয়। বর্তমানে ফরিদপুর ও খুলনা জেলায় পটল জন্মে। গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে যখন সবজির অভাব দেখা দেয় তখন পটল একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সবজি হিসেবে কাজ করে। জাতভেদে পটোলের ফলন প্রতি হেক্টরে চার টন থেকে ১৫ টন পাওয়া যায়।
জাত: বাংলাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে পটলের বিভিন্ন জাত দেখা যায়। যেমন- লম্বা ও চিকন, খাটো ও মোটা, গাঢ় সবুজ থেকে হালকা সবুজ। ডোরা কাটা ও ডোরা কাটা বিহীন, পুরু ত্বক থেকে হালকা ত্বক। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট পটলের দুটি জাত আবিষ্কার করেছে। জাত দুটো উচ্চ ফলনশীল ও রোগবালাই সহ্য করতে পারে সেগুলো হলো ‘বারি পটল-১’ ও ‘বারি পটল-২’। হেক্টরপ্রতি ফলন ৩০ থেকে ৩৮ টন।
১. বারি পটল-১
বৈশিষ্ট্যঃ
আকার: ফল ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি লম্বা, বেড় প্রায় ১.৫ ইঞ্চি।
ফলের ওজন : প্রায় ৫৫ গ্রাম।
প্রতি গাছের ফলন: সর্বোচ্চ ২৪০ টি ফল ধরে, যার মোট ওজন প্রায় ১০ কেজি। একর প্রতি ফলন: ১২১৪৫ কেজি বা প্রতি শতাংশে ১২০ কেজি।
২. বারি পটল-২
বৈশিষ্ট্যঃ
আকার: ফল ৩.৫ থেকে ৪ ইঞ্চি লম্বা, বেড় ১.৫ থেকে ১.৭৫ ইঞ্চি।
প্রতিটি ফলের ওজন: প্রায় ৫০ গ্রাম।
প্রতি গাছের ফল: সর্বোচ্চ ৩৮০ টি ফল ধরে, যার মোট ওজন ১৪ কেজি।
একর প্রতি ফলন: ১৫,৩৮৫ কেজি বা প্রতি শতাংশে ১৫০ কেজি।
বংশবিস্তার: এটি কাণ্ড এবং টিউবারের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে। শাখা কলমের ক্ষেত্রে পরিপক্ব কাণ্ড ব্যবহার করা হয়। এদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কাণ্ড মরে গেলেও শিকড় জীবিত থাকে। ফলে এই শিকড় থেকেই আবার গাছ জন্মে। রোপণের আগে পটোলের শিকড় গজিয়ে নিলে বেশি ভালো হয়।
জলবায়ু ও মাটি: উষ্ণ ও আদ্র জলবায়ু পটল চাষের জন্য বেশি তাপমাত্রা ও সূর্যালোকের প্রয়োজন। বন্যামুক্ত ও পানি জমে না এমন বেলে দো-আঁশ বা দো-আঁশ মাটি পটল চাষের জন্য ভাল। নদীর তীরে পলিযুক্ত মাটিতেও পটল চাষ করা যায়।
রোপণ সময় : অক্টোবর থেকে নভেম্বর অথবা ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাস পটল রোপণের উপযুক্ত সময়। পটল চাষের কথা চিন্তা করলে অক্টোবর মাসের আগেই জমি তৈরি করতে হবে। মাটিতে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা না থাকলে শাখা কলম শুকিয়ে মারা যায়। এ ক্ষেত্রে পলিব্যাগে শাখা কলম লাগানোর মাধ্যমে চারা গজিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এতে তীব্র শীত পড়ার আগেই গাছের অঙ্গজ বৃদ্ধি হয়। ফলে মোট জীবনকাল বেশি হলে আগাম ফলন পাওয়া যায় এবং যার বাজার মূল্য তুলনামূলক অনেক বেশি পাওয়া যায়। কারণ এগুলো ফেব্রুয়ারি -মার্চ মাসে বাজারে চলে আসে। ডিসেম্বর মাসেও পটল পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে বিশেষ প্রক্রিয়ায় পলিব্যাগে চারা তৈরি করে অবশ্যই আগস্ট মাসে তা জমিতে লাগাতে হবে। অন্য দিকে খরিপ মৌসুমের জন্য যেগুলো ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে লাগানো হয় সেটা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং জীবনকাল তুলনামূলক কম হয়। এদের ফলন তুলনামূলক বেশিহয়।
বারি পটল-১ ও বারি পটল-২ চাষ করলে গাছ লাগানোর ৯০ থেকে ৯৫ দিনের মধ্যে (প্রায় তিন মাস) ফলন পাওয়া যায়। পটল চাষের ক্ষেত্রে কয়েক দফায় শাখাকলম লাগানো যায় এবং গাছ থেকে সারা বছর ফলন পাওয়া যায়।
জমি তৈরি ও চারা রোপণঃ প্রথমে মাটি ভালো করে চাষ দিয়ে প্রস্তুত করে নেয়া উচিত। জমিকে ৪-৫টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরা ও সমান করে নিতে হবে। বেড পদ্ধতিতে পটল চাষ করলে ফলন ভালো হয় এবং বর্ষাকালে ক্ষেত নষ্ট হয় না। সাধারণত একটি বেড ১.০-১.৫ মিটার চওড়া হয়। বেডের মাঝামাঝি এক মিটার থেকে দেড় মিটার বা দু’হাত থেকে তিন হাত পর পর মাদায় চারা রোপণ করতে হয়। এক বেড থেকে আর এক বেডের মাঝে ৭৫ সেমি. নালা রাখতে হবে। মাদা বা পিট তৈরির ক্ষেত্রে, মাদা বা পিটের আকার- দৈর্ঘ্য- ৫০ সেমি. প্রস্থ- ৫০ সেমি. গভীরতা- ৪০ সেমি. নালা- ৭৫ সেমি।
মাদা থেকে মাদার দূরত্ব-১.০-১.৫ মিটার। মাদায় গাছের দূরত্ব-৭.০-১০.০ সেমি, গভীরতা-৫০ সেমি,মোথার সংখ্যা ১০,০০০/হেক্টর। সঠিকভাবে পরাগায়নের ক্ষেত্রে ১০% পুরুষ জাতের গাছ লাগানো উচিত অর্থাৎ ১০টি স্ত্রী গাছের জন্য ১টি পুরুষ গাছ লাগানো উত্তম এবং এসব গাছ ক্ষেতের সব অংশে সমানভাবে ছড়িয়ে লাগানো উচিত।
সারের মাত্রা ও প্রয়োগ: পটল চাষে মাদাপ্রতি সার প্রয়োগের পরিমাণ হলো-
সারের নাম চারা রোপণের সময় মাদায় রোপণের ২০ দিন পর ( ১ম কিস্তি ) রোপণের ৬০ দিন পর ( ২য় কিস্তি ) রোপণের ৯০ দিন পর ( ৩য় কিস্তি )
গোবর সার ৩-৪ কেজি
ইউরিয়া – ২০-২৫ গ্রাম ২০-২৫ গ্রাম ২০-২৫ গ্রাম
টিএসপি ৫০-৬০ গ্রাম
এমওপি – ২০-২৫ গ্রাম ২০-২৫ গ্রাম ২০-২৫ গ্রাম
পটল দীর্ঘমেয়াদি ফসল। এজন্য জুন মাস থেকে ফসল সংগ্রহের পর পর্যন্ত প্রতি মাসে একবার শতকে ৭৫ গ্রাম ইউরিয়া, ১০০ গ্রাম টিএসপি ও ৬০ গ্রাম এমওপি সার বেডের মাটিতে ছিটিয়ে মিশিয়ে সেচ দিলে ভালো হয় এবং ফলন বৃদ্ধি পায়।
মাচা তৈরি: পটল লতানো প্রকৃতির উদ্ভিদ, তাই এগুলো মাটির ওপর কিংবা খড় বিছিয়ে উৎপাদন করলে গায়ে সাদা সাদা ফ্যাকাসে বা হলুদ বর্ণের হয়ে পড়ে। এতে পটোলের বাজার মূল্য এবং রফতানিযোগ্যতা কমে যায়। মাচা সাধারণত দু ধরনের হয় – বাঁশের আনুভূমিক মাচান ও রশি দিয়ে তৈরি উলম্ব মাচা।
পানি নিকাশঃ পটল জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। তাই বৃষ্টি বা সেচের অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। সে পানি সময়মতো নালা দিয়ে বের করে দিতে হবে।
পরাগায়নঃ পটল পরপরাগায়ন জাতীয় সবজি। পটোলের পুরুষ ও স্ত্রী গাছ ভিন্ন হয়। ১০ ভাগ পুরুষ গাছ জমিতে সুষম দূরত্বে থাকলে অধিক পরাগায়ন হয়। পরাগায়ন না হলে ফুল শুকিয়ে ঝরে যায়। পরাগায়নের সময়কাল ভোর ৫টা থেকে সকাল ৮টা। পুরুষ ফুল সংগ্রহ করে পুংরেণু স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ডে লাগিয়ে কৃত্রিম পরাগায়ন করা যায়। এছাড়া পুরুষ ফুলের পরাগরেণু পানিতে মিশিয়ে ড্রপার দিয়ে একফোঁটা করে প্রতি স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ডে লাগিয়েও ভালো ফল পাওয়া যায়। পুরুষ ফুল স্ত্রী ফুলের ১৫ থেকে ২৯ দিন পর জন্মায়। তাই পুরুষ গাছ স্ত্রী গাছের ১৫ থেকে ২০ আগে লাগানো উচিত।
আন্ত:পরিচর্যাঃ পটল লতানো জাতীয় গাছ হওয়ায় বাউনী বা মাচা দিলে ফলন অনেক বেশি হয় এবং রোগবালাইয়ের আক্রমণ অনেক কম হয়। এছাড়া মাটির উপর খড়-কুটা বা কচুরীপানা দিয়ে তার উপর পটল গাছ তুলে দিলে তা থেকেও ভাল ফলন পাওয়া যায়। তবে সেক্ষেত্রে মাটির সংস্পর্শে এসে পটল রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, পটলের ফুল ও ফল নষ্ট হয়ে যায়, আগাছা বেশি হয় এবং রং ফ্যাকাশে হয়ে যায়। এছাড়া পটলের নীচের দিক সাদাটে রং-এর হয়। প্রতি ৪টি মাদার জন্য একটি করে মাচা দেওয়া হলে ফসলের পরিচর্যা ও পটল সংগ্রহ সুবিধা হয়।
মুড়িফসল হিসাবে পটল: পটল মুড়ি ফসল হিসেবে চাষ করা যায়। উঁচু জমিতে পটলের মুড়ি ফসল করা হয়। এ ক্ষেত্রে অক্টোবর মাসে পটলের জমির আগাছা ও শুষ্ক পুরনো লতা ছেটে দেয়া হয়। কোঁদাল দিয়ে জমি কুপিয়ে দিতে হয়। এতে গাছ নতুনভাবে উদ্দীপ্ত হয়। মুড়ি ফসলে মূল ফসলের অনুরূপ সার প্রয়োগ ও অন্যান্য পরিচর্যা করতে হয়। মুড়িফসলে মূল ফসলের চেয়ে বেশি ফলন হয়। পটল গাছে প্রথম বছর কম ফলন হয়। দ্বিতীয় বছর ফলন বেশি হয়, তৃতীয় বছর ফলন কমতে থাকে। একবার লাগানো গাছ তিন বছরের বেশি রাখা উচিত নয়।
পটলের পোকামাকড়ঃ পটলের গাছ ও ফল বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় দ্বারা আক্রান্ত হয়। ফলের মাছি পোকা, কাটলে পোকা, উঁই পোকা, মিলিবাগ, সাদা মাছি ও লাল মাকড় অন্যতম।
ফলের মাছি পোকা: ফলের মাছি পোকা কচি ফলের ভেতর ছিদ্র করে ও ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে ক্রীড়া বের হয়। এরা ফলের নরম অংশ খেয়ে পূর্ণ বয়স্ক পোকা বের হয়ে আসে।
প্রতিকার: ক্ষেত পরিষ্কার রাখা। পোকা দমনে ফাঁদের ব্যবহারও ব্যাপক জনপ্রিয়। বিষটোপ আরেকটি জরুরি দমন উপাদান। এ ছাড়া সেক্স ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করে পোকামাকড় দমন করা সম্ভব। আক্রমণ মারাত্মক হলে সবিক্রন ২ মিলি/লিটার বা সাইপারমিথ্রিন ১ মিলি/লিটার বা এসিমিক্স ১ মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পরপর ৩-৪ বার স্প্রে করেও ভালো ফল পাওয়া যায়।
পটলের আঁশ পোকা / মিলি বাগঃ ছোট ছোট আঁশ পোকাগুলো কাণ্ড ও পাতার রস চুষে ক্ষতি করে। ফলে কাণ্ড বিবর্ণ এবং শুকিয়ে নষ্ট হয়। এছাড়া মিলি বাগ পাতা, ফল ও কচি কাণ্ডের রস চুষে খায় এবং এতে গাছ নষ্ট হয়।
প্রতিকারঃ আক্রান্ত কাণ্ড ও গাছ তুলে নষ্ট করা। আক্রমণ বেশি হলে পোকা দমনের জন্য ইমিডাক্লোরপ্রিড গ্রুপের টিডো ১ মিলি/লিটার, পাইরাজিন ৪ গ্রাম ( ১০ লিটার পানিতে ), মার্শাল ২ মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
লাল মাকড় : আক্রান্ত পাতা শক্ত চামড়ার মতো হয় এবং পাতা বিবর্ণ হয়ে ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। লাল মাকড় আকারে অত্যন্ত ছোট হয়। এরা পাতার নিচের দিকে অবস্খান করে। এদের আক্রমণে পাতা শক্ত চামড়ার মতো হয়ে কুঁকড়ে যায়। ব্যাপক আক্রমণের ফলে সম্পূর্ণ পাতা হলুদ ও বাদামি রঙ ধারণ করে এবং ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। ফলে গাছের বৃদ্ধি কমে যায় এবং ফলন অনেক কমে যায়।
প্রতিকার: পটল ক্ষেত পরিষ্কার রাখা। এক কেজি আধা ভাঙা নিমবীজ ১০ লিটার পানিতে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে ওই পানি পাতার নিচের দিকে স্প্রে করা। আক্রমণের হার বেশি হলে ওমাইট বা টলস্টার (প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি মিশিয়ে), ইবামেকটিন গ্রুপের ভার্টিমেক ১.২ মিলি/লিটার বা একামাইট ২ মিলি/ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পরপর স্প্রে করতে হবে।
পটোলের রোগ ও প্রতিকারঃ
শিকড়ের গিট রোগ: পটোলের শিকড়ে গিট রোগ মারাত্মক সমস্যা। কৃমির আক্রমণে এ রোগ হয়। এর আক্রমণে আক্রান্ত গাছে ছোট-বড় অনেক গিঁটের সৃষ্টি হয়। ফলে এদের মূল নষ্ট হয়ে খাবার নিতে পারে না। গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। গাছ খাটো হয়ে পড়ে। ফলন মারাত্মক কমে যায়।
প্রতিকার : পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ করা। সরিষা, মরিচ, গম, ভুট্টা ইত্যাদি দ্বারা ফসল চক্র করা। ভালো ভাবে চাষ ও মই দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে পতিত রাখা। পটল রোপণের ২০-২৫ দিন আগে হেক্টর প্রতি মুরগির বিষ্ঠা ৩-৫ টন বা সরিষার খৈল ৪০০-৫০০ কেজি মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দেয়। ফুরাডান ৫ জি বা মিরাল ৩ জি, কুরাটার ৫ জি ৩০-৪০ কেজি/হেক্টরও লতা লাগানোর সময় এবং পরবর্তী ৪ মাস পর পুনরায় প্রয়োগ করা হয়।
পাউডারি মিলডিউ : এ রোগে পাতার উপরে সাদা সাদা পাউডার দেখা যায় যা পাতা নষ্ট করে যায়। পাতার ওপরের দিকে ও কাণ্ডে পাউডারের মতো ছত্রাকের জীবাণুর প্রলেপ পড়ে। এতে ক্রমান্বয়ে কচি পাতা আক্রান্ত হয়। আক্রমণের প্রথম স্তরে দাগগুলো সাদা ধীরে ধীরে হলুদ হয়ে সম্পূর্ণ পাতা শুকিয়ে যায়।
প্রতিকারঃ আক্রান্ত গাছের পরিত্যক্ত অংশ পুড়ে ফেলা। পরিমিত সার, সেচ প্রয়োগ। থিওভিট ( সালফার জাতীয় ) ২ গ্রাম অথবা প্রোপিকোনাজল গ্রুপের (টিল্ট ) ০.৫ মিলি/ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
পটলের গ্যামোসিস বা কাণ্ডের রস ঝরা রোগঃ এর ফলে শীতের সময় পটোল গাছের কাণ্ড ফেটে যায় এবং এক ধরনের আঁঠালো পদার্থ নি:সৃত হয়। এটা পরবর্তীকালে বাতাসের সংস্পর্শে এসে শক্ত হয়ে কাণ্ডের সাথে লেগে যায়।
প্রতিকার : আক্রান্ত গাছতুলে নষ্ট করতে হবে। রোগমুক্ত গাছ থেকে কাটিং সংগ্রহ করতে হবে। কাটিং ছত্রাকনাশক দ্বারা শোধন করতে হবে। আক্রান্ত কাণ্ডে বর্দোপেষ্ট ( ১০ গ্রাম তুঁতে + ১০০ গ্রাম চুন + ১ লিটার পানি ) লাগানো এবং ১% বর্দোমিকচার বা সানভিট স্প্রে করা।
ফসল সংগ্রহঃ কচি অবস্হায় সকাল অথবা বিকালে পটল সংগ্রহ করতে হবে । সাধারণত জাতভেদে ফুল ফোটার ১০-১২ দিনের মধ্যে পটল সংগ্রহের উপযোগী হয়। ফসল এমন পর্যায়ে সংগ্রহ করা উচিত যখন একটি ফল পূর্ণ আকার প্রাপ্ত হয়েছে কিন্তু বেশি পরিপক্ব হয়নি। বেশি পরিপক্ব ফলের বীজ বেশি হয় এবং বীজ শক্ত হয়ে যায় ফলে ফসল খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে যায়। পটল গাছে ফেব্রুয়ারি থেকে ফল ধরা শুরু হয়ে অক্টোবর পর্যন্ত মোট নয় মাস সংগ্রহ করা যায়। সপ্তাহে কমপক্ষে একবার ফল সংগ্রহ করতে হবে।
তথ্যসূত্রঃ আগ্রিকালচার লারনিং