সিজার ডেলিভারির কিছু সুবিধা-অসুবিধা জেনে নিন

সিজার নিয়ে সমাজে নানা কথা প্রচলিত আছে। অনেকে ভাবেন, যারা শারীরিক ও মানসিকভাবে দূর্বল, ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা নেই, ধৈর্য নেই, তারাই কেবল সিজার করতে ছোটেন। ফলে সিজার করে সন্তান জন্ম দেওয়া মায়েরা গন্য হন দূর্বল হিসেবে।

আসলে তা নয়। যদিও এটা ঠিক অনেকেই আজকাল নরমাল ডেলিভারির ঝামেলা ও ব্যথা এড়াতে সিজার পছন্দ করছেন। ডাক্তাররাও কখনো সময় বাঁচাতে করে দিচ্ছেন। কিন্তু এটা ঠিক যে আগে থেকে প্ল্যান করে সিজার করা অনেক নিরাপদ৷ তাতে অনেক অযথা বিপদের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। তবে তার মানে এই নয় যে চিকিৎসকের মতামত অগ্রাহ্য করে, ভালো-মন্দ না বুঝে সিজারের জন্য ছুটতে হবে। কারণ সিজার একটি বড় আপারেশন। তার সুবিধে যেমন আছে, অসুবিধেও আছে ঢের।

​সিজারের সুবিধা
আগে থেকে প্ল্যান করে করা হয়৷ কাজেই মা-বাবা ও অন্যান্যরা সঠিকভাবে জানতে পারেন কবে ও কোন সময় সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে। ফলে অনেকে নিজেদের পছন্দমতো দিন-ক্ষণও বেছে নেন। কোনো অনিশ্চয়তা থাকে না৷ থাকে না প্রসব-ব্যথা সহ্য করার ভয়। প্রসবের আগে-পরে অনেকরকম প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। টাকা যোগার করা ও হাসপাতাল ঠিক করার পাশাপাশি যাতায়াতের জন্য গাড়ি ব্যবস্থা করা, বাড়িতে সাহায্যকারীর ব্যবস্থা করা, অন্য সন্তান থাকলে কীভাবে তার দেখভাল হবে তা ঠিক করে নেওয়া ইত্যাদি৷ হঠাৎ করে প্রসব ব্যথা উঠে গেলে যা অনেক সময় ঠিক করে করা সম্ভব হয় না।

আচমকা বিপদের আশঙ্কা থাকে না৷ দুটি জীবনের প্রশ্ন। যদিও নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার দৌলতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আগে থেকেই বোঝা যায় কী হতে চলেছে, তাও আগে থেকে প্রস্তুত থাকলে হঠাৎ বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হলেও তা সামলানো যায় সহজে। যেমন মাকে যদি রক্ত দিতে হয় বা শিশু বিশেষজ্ঞের পাশাপাশি নবজাতক বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হয় ইত্যাদি, সেসব আগে থেকে ব্যবস্থা করে কাজে নামলে বিপদের আশঙ্কা চলে যায় তলানিতে।

​সিজারের অসুবিধা
যতই যাই হোক, অপারেশন তো বটে৷ কাজেই সে সংক্রান্ত বিপদের আশঙ্কা একেবারেই থাকে না, এমন নয়৷ বিরল দু-এক ক্ষেত্র হলেও বিপদ হতে পারে৷ ওষুধপত্র বেশি লাগে। প্রথম ৪৮ ঘণ্টা ব্যথার ওষুধ লাগে৷ অ্যান্টিবায়োটিক ও অন্যান্য ওষুধও লাগে কিছু৷ স্বাভাবিক প্রসবের তুলনায় রক্তপাত বেশি হয়। পুরো অজ্ঞান করে করলে সে সংক্রান্ত কিছু সমস্যা আসতে পারে৷ আবার শিরদাঁড়া অবশ করার ইনজেকশন দিয়ে করলেও সামান্য দু-এক ক্ষেত্রে একটু সমস্যা হয়।

কাটাছেঁড়া হওয়া মানেই সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়। ক্যথেটারের জন্য ইউরিনে সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়ে। সুস্থ হতে বেশি সময় লাগে। যদিও একেবারে শুয়ে-বসে থাকার গল্প নেই। তাও মোটামুটি দিন পনেরো সময় লাগে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে।

সূত্র: এই সময়