মাথা ব্যথার অনেক কারণ থাকতে পারে। আসলে দুশ্চিন্তা, অ্যানিমিয়া থেকে নানা সমস্যা তৈরি হয়ে যায়। এছাড়াও মাইগ্রেন হতে পারে মাথা ব্যথার অন্যতম কারণ। এই বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
মুশকিল হল, অনেকে রোজই এই সমস্যায় পড়েন। তবে এরপরও বুঝতে পারেন না যে কেন সমস্যা হচ্ছে। আর তার থেকেই দেখা দিতে পারে বড়সড় জটিলতা। তাই সতর্ক হয়ে যাওয়া জরুরি।
তেল মালিশ করা: মাথায় ব্যথা হোক বা চোখে ব্যথা, ম্যাসাজ করলে অনেকেই খুব আরাম পান। আসলে, কয়েক বছর ধরে, মাথাব্যথার জন্য তেল মালিশের নানান উপায় প্রচলিত হয়ে আসছে। আপনি মাথা ম্যাসাজ সহ মাথা টিপে দিন। এতে অনেকটাই স্বস্তি পাওয়া যায়।
পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন: অনেক সময় পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার জন্য মাথাব্যথা শুরু হয়। বেশি মোবাইল দেখলেও মাথা ও চোখ ব্যাথা শুরু হয়। এর জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত এবং গভীর ঘুম। কমপক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। এতে মাথাব্যথার সমস্যা খুব সহজে দেখা দেবেনা।
ধ্যান বা মেডিটেশন করুন: মনকে চাপমুক্ত রাখতে এবং মাথাব্যথা দূর করতে আপনাকে অবশ্যই ধ্যান করতে হবে। প্রতিদিন কয়েক মিনিটের ধ্যান আপনার মাথাব্যথা এবং চোখের ব্যথা থেকে মুক্তি দেবে।
ভালো ডায়েট মেনে চলুন: আপনি যদি মাথা ব্যথার সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে আপনার খাবার এবং জীবনযাত্রার দিকেও মনোযোগ দেওয়া দরকার। ডায়েটে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। খাবারে রসুন ও লেবুর মতো জিনিস রাখুন।
চিকিৎসা শাস্ত্র বলছে, দীর্ঘক্ষন যদি খালি পেটে থাকা হয় তার ফলেও মাইগ্রেনের যন্ত্রণা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে নিজের দিক থেকে যতটুকু করণীয় সেটা করে ফেলাই ভালো। তাড়াতাড়ি মাইগ্রেনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে নিজের হাতের কাছে রাখুন এই খাবারগুলি।
১. মাশরুম, ডিম বা বাদামের মত খাবার গুলিতে প্রচুর পরিমাণে রাইবোফ্ল্যাবিন থাকে। যাদের খাবার হজম করতে খানিকটা অসুবিধা হয় এবং পেটের সমস্যা লেগেই থাকে তা্ঁরা নিজেদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় এই ধরনের খাবারগুলি রাখতে পারেন। খালি পেটে দীর্ঘক্ষণ কাজ করলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে মাইগ্রেন শুরু হতে পারে।
২. এক কাপ গরম কফি। এমনিতেই কফি সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে ভীষণভাবে সাহায্য করে। কিন্তু মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করতেও এই কফির জুড়ি মেলা ভার। মাইগ্রেনের যন্ত্রণার সময় যদি এক কাপ কড়া কফি খেতে পারেন তাহলে উপকার পাবেন। কারণ ক্যাফিন প্রাকৃতিক বেদনাশক বা পেইনকিলার হিসেবে কাজ করে।
৩. যন্ত্রণা কমানোর জন্য ঘনঘন জল খেতে পারেন। অতিরিক্ত জল না খাওয়া গেলে জল সমৃদ্ধ বিভিন্ন ফল হাতের কাছে রাখতেই পারেন। যেমন তরমুজ শসা এই জাতীয় ফল মাথা যন্ত্রণা কমাতে খুবই সাহায্য করে, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
৪. আঙুর মাইগ্রেনের যন্ত্রণা কমাতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। কিছুটা বেশি পরিমাণে আঙুর কিংবা আঙুরের রস যদি এই সময় খেয়ে নিতে পারেন তাহলে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। তবে অবশ্যই আঙুরের রসের সঙ্গে কিছুটা জল মিশিয়ে নেবেন।
৫. গরম দুধ মাইগ্রেনের যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে। এক গ্লাস গরম দুধ আপনার শরীরকে চাঙ্গা করতেও ভীষণভাবে উপকারী। অনেকের মা- ঠাকুমারা পরামর্শ দেন মাইগ্রেনের যন্ত্রণা শুরু হলে গরম দুধের সঙ্গে গরম জিলাপি খাওয়ার। এটাও নাকি মাইগ্রেনের মাথাব্যথা কমাতে দারুনভাবে কাজ করে।
৬. খাবার-দাবার ছাড়াও মাইগ্রেনের যন্ত্রণা দূর করার অন্যতম সহজ উপায় হল মালিশ করা। এই সময় মাথায় এবং ঘাড়ে মালিশ করলে সেই জায়গা গুলিতে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। আর রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি। পাওয়ার কারণে যন্ত্রনা অনেকটাই কমতে শুরু করে আরাম বোধ হয় শরীরের সেই অংশে।
উপরিউক্ত পদ্ধতিগুলি সবই ঘরোয়া। এইগুলি খাওয়ার পরেও যদি কোন রকম ভাবে যন্ত্রণা না কমে তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। মাইগ্রেনের যন্ত্রণা অনেকের ক্ষেত্রেই অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে। কাজেই চিকিৎসকের পরামর্শ মত ওষুধ খেলে অনেকটাই আরাম মিলবে যন্ত্রণা থেকে।