ব্যায়ামের কথা শুনলেই মনে ভয় জাগে। বিশেষ করে এর জন্য আলাদা সময় বের করা প্রায় সবার জন্যই কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু ব্যায়াম না করার ফলে অনেকের ওজন বেড়ে নানা অসুখ তৈরি হয়। তাই সকলের জন্য ব্যায়াম জরুরি। কিছু সহজ ব্যায়াম আছে যা চাইলেই ঘরের চেয়ার কিংবা বিছানায় বসে করে ফেলা সম্ভব। এতে অতিরিক্ত মেদ যেমন বাড়ে তেমনি বৃদ্ধি পায় মেটাবোলিজম। আমরা আপনার জন্য কয়েকটি সহজ ব্যায়াম নিয়ে এসেছি যা সারাদিন আপনাকে কর্মক্ষম এবং সতেজ রাখার পাশাপাশি বাড়তি মেদ ঝরিয়ে আপনাকে করে তুলবে সুঠাম দেহের অধিকারী।
১. দাঁড়িয়ে সামনে ঝুঁকে শরীর ভাজ করুন
পা দুটি এক জায়গায় নিয়ে হাঁটু সামান্য ভাজ করুন। এবার দেহের উপরাংশ আস্তে আস্তে নিচের দিকে ভাজ করে আনতে থাকুন। যাদের পেটে এবং শরীরের অন্যান্য জায়গায় মেদ অনেক বেশি তাদের পক্ষে প্রথম প্রথম একটু কষ্ট হবে। ক্রমশ ঝুঁকতে ঝুঁকতে হাত দিয়ে পায়ের পেছনের মাটি স্পর্শ করার চেষ্টা করুন। এই অবস্থানে থেকে ৪ বার শ্বাস নিন। এবার উঠে দাঁড়ান এবং আবার একই কাজ ৩ বার করুন।
২. শুয়ে আড়মোড়া দিন
চিত হয়ে শুয়ে দুই হাত দুই দিকে লম্বালম্বি করে মেলে দিন। দুই পা লম্বালম্বি টানটান করে রাখুন। এবার এক পায়ের হাঁটু ভাঁজ করে অন্য পায়ের উপর এমন ভাবে রাখুন যেন ভাঁজ করা হাঁটুর লম্বা করে রাখা পায়ের অন্য পাশের মাটি স্পর্শ করে। এবার অন্য পা ভাঁজ করে একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন।
৩. নৌকা হওয়া
কোমরে হাত রেখে হাঁটু ভাঁজ করে বসুন। এসময় আপনার পিঠ সোজা থাকবে। আস্তে আস্তে পা সামনের দিকে মেলে দিন এবং কোমর থেকে হাত সরিয়ে সামনের দিকে টান টান করে ধরুন। এবার আস্তে আস্তে পা হাঁটু ভাজ না করেই উপরের দিকে তুলতে শুরু করুন। এক পর্যায়ে আপনি যখন নৌকার মত আকার ধারণ করবেন তখন এই অবস্থায় ৫ বার শ্বাস নিন।
৪. চেয়ার হওয়া
না, আপনাকে পুরোপুরি চেয়ারের রূপ ধারণ করতে হবে না। পা দুটি এক জায়গা করে দাঁড়িয়ে হাত দুটো মাথার উপর নিয়ে যান। এবার মাথার উপর হাত দুটি এক করে আস্তে আস্তে সামনে আনুন এবং একই সাথে কোমর ভাজ করে চেয়ারে বসার মতো ভঙ্গিতে আসুন। হাত জোর অবস্থায় শরীরের দুই পাশেই মোড় নিন। প্রতিটি অবস্থানে ৫ বার শ্বাস নিন।
৫. দুই পাশে আড়মোড়া দিন
দুই পা মেলে পিঠ সোজা করে দাঁড়ান। এক হাত অন্য হাত দিয়ে এমন ভাবে টান দিন যেন ওই পাশ থেকে পুরো শরীর টান দেওয়া পাশে চলে আসে। এই টান টান অবস্থায় ৫ বার শ্বাস নিন। এবার অন্য পাশের হাত দিয়ে একই ভাবে টান দিয়ে একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন।
৬. বিড়াল এবং গরু হওয়া
দুই হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে হাঁটু ভাজ করে মাটিতে হামাগুড়ির মতো ভঙ্গি করুন। যখন শ্বাস নেবেন তখন পেট ভাজ করে বিড়ালের পিঠের মতো করুন এবং যখন নিঃশ্বাস ত্যাগ করবেন তখন পিঠ এমন ভাবে নিচে নামিয়ে আনবেন যেন, আপনাকে দেখতে গরুর মতো মনে হয়। এভাবে ৪ বার করুন।
৭. পেটের আড়মোড়া
পা মেলে দিয়ে মেঝেতে বসুন। এবার হাঁটু ভাঁজ করে সামনের দিকে আনুন। মাথার পেছনে দুই হাত রেখে ডানে মোড় নিন। একই সাথে বাম পা ভাঁজ করে এমন ভাবে উপরের দিকে নিয়ে আসুন যেন তা ডান হাতের কনুইতে স্পর্শ করে। এই অবস্থায় ১ মিনিট থাকুন। একই ভাবে বাম হাত আর ডান পায় দিয়ে পূর্বের কাজটি অনুসরণ করুন।
৮. ব্রিজ হোন
চি হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুই পা এক জায়গায় আনুন। এবার হাঁটু ভাঁজ করে দুই পা নিতম্বের কাছাকাছি নিয়ে আসুন। এবার দুই হাত দুই পায়ের গোড়ালির কাছাকাছি নিয়ে যান। এবার আস্তে আস্তে কোমর তুলতে শুরু করুন। তুলতে তুলতে যখন পিঠের মতো আড়াআড়ি অবস্থানে চলে আসবে তখন ১ মিনিট অবস্থানটি ধরে রাখুন।
৯. সাপের ফণা
এই ব্যায়ামটি আপনার পেটের পেশি শক্তিশালী করবে। মেঝেতে কপাল ঠেকিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার হাঁটু ভাজ করে পা উপরের দিকে তুলুন। এখন দু হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে আস্তে আস্তে শরীরর উপরের অংশ উপরের দিকে তুলতে শুরু করুন। কনুই টান টান করে পিঠের দিকে শরীরর যতটা সম্ভব নিয়ে যান এবং থুতনি উপরে নিয়ে আসুন। এভাবে ৩০ সেকেন্ড করে ৫ বার করুন।
১০. কুকুরের ভঙ্গি
পুশ আপ পজিশনে যান। এক পা মাটিতে রেখে অন্য পা ছবির মতো সোজা করে উপরে তুলুন। একই সাথে শরীরের উপরের অংশ হাতের অবস্থান থেকে অনেকখানি পিছনে নিয়ে আসুন। এই অবস্থায় ৩০ সেকেন্ড থেকে অন্য পা মাটিতে রেখে আরেক পা উপরে তুলুন।