দেশি-বিদেশি জাতের ছাগল পালন ও প্রজনন খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন ফরিদপুরের বেকার যুবক জহির শেখ। নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে তুলেছেন বিশাল একটি খামার। খামার দেখতে ও ছাগল কিনতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতারা আসেন । আর এধরনের খামার করতে সহযোগিতা করছে জেলা প্রাণিসম্পক বিভাগ।
ফরিদপুর সদর উপজেলার বিলমামুদপুর গ্রামের দরিদ্র বেকার যুবক জহির শেখ। দশ বছর আগে দেশীয় প্রজাতির “ব্ল্যাক বেঙ্গল” জাতের ৪টি ছাগল কিনে পালন শুরু করেন। এক বছর পর থেকেই চারিটি ছাগল থেকে লাভ পেতে শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি বড় পরিসরে গড়ে তোলেন একটি প্রজনন খামার। প্রতিদিন ছাগল প্রজনন ও ছাগলের বাচ্চা বিক্রি করে ভালোই আছেন এই খামারী।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের রাজস্থান থেকে হরিয়ানা, তোতাপারি, যমুনাপারি, ব্রিটল জাতের বিদেশি ছাগল কিনে খামারের পরিধি বাড়িয়েছেন তিনি। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এক সময়ের বেকার যুবক মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে হয়ে উঠেছেন একজন সফল উদ্যোক্তা।
বর্তমানে খামারে হরিয়ানা, তোতাপারি, যমুনাপারি, ব্রিটল জাতের প্রায় ৫০টি ছাগল রয়েছে। এসব ছাগল পরিচর্যায় সহযোগিতা করছেন পরিবারের অন্য সদস্যরাও। বিদেশি জাতের এই ছাগলগুলো বছরে দুই বার বাচ্চা দেয়। দেশের বিভিন্ন জেলার ক্রেতারা প্রতি মাসে ৬ থেকে ৮টি বাচ্চা এখান থেকে কিনে নিয়ে যান।
বাচ্চা বিক্রি ছাড়াও প্রতিদিন ছাগল প্রজনন থেকেও ভালো টাকা আয় করছেন এই যুবক। দশ বছরের ব্যবধানে কুড়ে ঘর থেকে হয়েছে পাকা দালান। পরিবার পরিজন নিয়ে ভালোই আছেন এই সফল খামারী। ছাগলের খামারে প্রতিমাসে খরচ হয় প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কাঠালের পাতা, ডাবরির ভূষি, গমের ভূষি ও ছোলার ভূষি ছাগলের প্রিয় খাবার। প্রতিমাসে সব খরচ বাদে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় হয় বলে জানালে এই খামারী।
খামারী জহির শেখ জানান, “ব্ল্যাক বেঙ্গল” জাতের ছাগল দিয়ে শুরু করে ছিলাম। হরিয়ানা, তোতাপারি, যমুনাপারি, ব্রিটল জাতের বিদেশি ছাগলসহ প্রায় ৫০টি ছাগল আছে। একসময় আমাদের কিছুই ছিলোনা। এখন আমার বাড়ি হয়েছে একটু জায়গাও হয়েছে। আমরা এখন পরিবার নিয়ে ভালোই আছি।
প্রতিবেশী জানায়, আগে এদের কিছুই ছিলো না। ছাগল লালন পারন করে এরা খুব ভালো আছে। দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ খামার দেখতে আসে। এখান থেকে ছাগল কিনে নিয়ে যায়।
ফরিদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: নুরুল্লাহ্ মো: আহসান বলেন, ছাগলের প্রজনন খামার করে অনেক বেকার যুবক এখন স্বাবলম্বী হয়েছে। “ব্ল্যাক বেঙ্গল” জাতের পাশা পাশি আমরা খামারীদের বিদেশি জাতের ছাগল পালনের পরমর্শ দিয়ে থাকি। প্রাণিসম্পদ বিভাগ সব সময় খামারীদের পাশে আছে।
তথ্যসূত্রঃএ বি নিউজ ২৪