প্রায় ২০০ প্রজাতির গাছ আছে বাসারের সংগ্রহে

পটুয়াখালীর বাউফলে একজন শিক্ষক তার বসতবাড়িতে গড়ে তুলেছেন দেশি-বিদেশি প্রায় ২০০ প্রজাতির বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছের বিশাল সংগ্রহশালা।

 

 

প্রতিদিন তার এই বাগান দেখতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ভিড় করছেন। আগতদের মাঝে বিনা মূল্যে এই বাগান থেকে ফলমূল ও নানান ধরনের গাছের চারা বিতরণ করা হচ্ছে।

 

 

বাণিজ্যিক কোনো উদ্দেশ্য ছাড়া পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই তার এই কার্যক্রম বলে জানান কৃষি উদ্যোক্তা আবুল বাসার।

 

 

বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের আবুল বাসার। পেশায় একজন শিক্ষক হলেও স্থানীয় মানুষের কাছে তিনি একজন আদর্শ বৃক্ষপ্রেমী হিসেবে পরিচিত।

 

 

আবুল বাসার তার বাড়ির আঙ্গিনার ৪৫ শতাংশ জায়গায় গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন গাছের সংগ্রহশালা। এখানে তিনি যেমন বিদেশি ফলমূলের গাছ সংগ্রহ করেছেন তেমনি দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির গাছও রয়েছে তার সংগ্রহে।

 

 

বৃক্ষপ্রেমী আবুল বাসার বলেন, ‘আমার রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির নাগলিঙ্গম, মহুয়া, চন্দন, ছেদ চন্দন, কর্পুর, সুলতানি চাপার মতো গাছ। এ ছাড়া বিভিন্ন বিদেশি গাছ যেমন পার্সিমন, এভকাডো, ডুরিমন এ ধরনের গাছ রাখার চেষ্টা করেছি।

 

 

পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, মাল্টা, আপেল, কমলা ও বিভিন্ন জাতের বাদাম, তেঁতুল, কলা, থাইপাতা, বিভিন্ন জাতের তুলশিপাতা, তেজপাতা, দারুচিনি, জামরুল থেকে শুরু করে সবধরনের গাছের সংগ্রহে রেখেছি।

 

 

দেশের যেখানেই কোনো গাছের সন্ধান পেয়েছি সেখান থেকেই এসব গাছের চারা, কলম কিংবা বীজ সংগ্রহ করে তা দিয়ে এই গাছ তৈরি করেছি। আমার এখানে গাছ গুলোতে সারাবছরই কোনো না কোনো ফলফলাদির উপস্থিতি থাকছে।’

 

 

শিক্ষকের গড়া এই বাগানে সবসময় ফল, ফুল থাকায় বিভিন্ন পাখির অবাধ বিচরণ দেখা যায়। বাগানে কোনো ক্ষতিকর কীটনাশক কিংবা সার ব্যবহার না করায় পাখি এবং মানুষ সহজেই এসব ফল খেতে পারছেন।

 

 

আবুল বাসার আরও জানান, তিনি গাছের জন্য বিভিন্ন প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করেন। যেমন- গোবর সার, তিলের খৈল, সরিষার খৈল, কালিজিরার খৈল।

 

 

এছাড়া পেস্টিসাইড হিসেবে সাদাপাতা, মেহগনি গাছের ফল, নিমপাতার মতো উপাদান ব্যবহার করে তিনি নিজেই পেস্টিসাইড তৈরি করেন। এজন্য তার উৎপাদিত ফলমূল এবং শাক-সবজি শতভাগ নিরাপদ বলেও দাবি করেন এই কৃষি উদ্যোক্তা।

 

 

জলবায়ুর প্রভাবসহ বিভিন্ন কারণে কমছে দেশে গাছপালসহ পশুপাখির সংখ্যা। ব্যক্তি উদ্যোগে এ ধরনের বাগান তৈরি করতে পারলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাসহ চারপাশের পরিবেশকে বাসযোগ্য করা সম্ভব বলে মনে করেন বৃক্ষপ্রেমী আবুল বাসার। এসব কারণে স্থানীয়সহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ এই বাগান দেখতে আসেন। আর বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা দেখে সবাই মুগ্ধ হন।

 

তথ্যসূত্রঃ জাগো নিউজ ২৪