২৫ লাখ টাকার গাড়ল রয়েছে ওয়াহিদের খামারে

খুলনার খালিশপুরের ওয়াহিদ খান গাড়লের খামার করে সফল হয়েছেন। ছাগলের খামার করার ইচ্ছে থেকে গাড়লের খামারের দিকে ঝুঁকেন তিনি। বিদেশি প্রজাতির এই পশুর খামার করে সফল হওয়ায় এলাকার অনেক মানুষ তার খামারটিকে দেখতে প্রতিদিন ভীড় করছেন।

 

 

জানা যায়, বছর দুয়েক আগে তার ছাগলের খামার করার ইচ্ছে হয়। তাই তিনি ভারতের তোতাপুরি আর হরিয়ানা জাতের কয়েকটি ছাগলের সাথে একটি গাড়লের বাচ্চাও কিনে নিয়ে আসেন। সেই একটি বাচ্চা থেকে এখন তার খামারে ১৫০টি গাড়ল হয়েছে। ছাগল বাদ দিয়ে এখন তিনি গাড়লের খামরি। খামারের নাম দিয়েছেন মেসার্স খান অ্যাগ্রো’।

 

 

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, গড়াল দেখতে ভেড়ার মতো। এটি ভেড়ারই একটি উন্নত জাত। আকারে ভেড়া থেকে বড় হয়, ওজন দ্রুত বাড়ে, আর এর মাংস খুব সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও চর্বি কম থাকে।

 

 

খামারি ওয়াহিদ খান বলেন, আগে চিকিৎসা সরঞ্জামের ব্যবসা করতাম। সেই ব্যবসা ছেলেকে বুঝিয়ে দিয়ে আমি গড়ালের খামার করেছি। আমার কৃষি কাজ ভালো লাগে।

 

 

তাই বছর দুয়েক আগে ছাগলের খামার করার উদ্যোগ নেই। নিচু জমি ভরাট করে টিনের ছাউনি ও কাঠের পাটাতন দিয়ে খামার ঘর তৈরি করি। গাড়ল সারাদিন বাইরে থাকে। ঘুরে ঘুর ঘাস খায় আর রাতে খামার ঘরে ঘুমায়। ঘাসের পাশাপাশি কিছু দানাদার খাবারও দেই।

 

 

তিনি আরো বলেন, ছাগল পালনের ইচ্ছা থাকলেও গাড়লের খামার করেছি। কারণ, ছাগলের রোগবালাই বেশি হয়। আর ছাগল থেকে গাড়ল বেশি লাভজনক। গড়ালের রোগবালাইও কম আর এর খাবারের খরচও যথেষ্ট কম।

 

 

প্রায় ৭ মাস পর পর মা গাড়ল বাচ্চা দেয়। কখনো একটি আবার কখনো একসঙ্গে দুটি বাচ্চাও দেয় গাড়ল। একমাস পর আবারও গর্ভধারণ করে। এতে খুব দ্রুত গাড়লের সংখ্যা বেড়ে যায়। বর্তমানে আমার খামারে ১৫০টি গাড়ল রয়েছে। আশা করছি ৫০০ গড়াল লালন পালন করবো।

 

 

ওয়াহিদ খান আরো জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার খামারের ভিডিও দেখে অনেকেই গাড়ল কিনতে আগ্রহী হন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আমার কাছ থেকে গাড়ল পালনের পরামর্শ নেন।

 

 

আমি এই পর্যন্ত ৬ লাখ টাকার গাড়ল বিক্রি করেছি। এখন খামারে যে সংখ্যক গাড়ল আছে তার দাম প্রায় ২৫ লাখ টাকা।

 

 

খামারিরা জানায়, ৬ মাস বয়সী একটি গাড়লের দাম কমপক্ষে ৭ হাজার টাকা। ১ বছর বয়সী গড়ালের ওজন ২৫ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। বর্তমানে এর মাংস তেমন পাওয়া না গেলেও স্থানীয় ভাবে এর মাংস পাওয়া যায়।

 

 

প্রতি কেজি প্রায় ৭০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। খুলনার আশেপাশের অনেক জায়গায় গাড়লের খামার গড়ে উঠেছে। দিন দিন খামারের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে।

 

 

খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অরুণ কান্তি মণ্ডল বলেন, এটি একটি ভেড়া জাতিয় পশু। এর তেমন লালন পালন আমাদের দেশে না থাকলেও খুলনা জেলায় এর প্রথম খামার হয়।

 

 

এই পশুর পশমের তেমন কোনো বাণিজ্যিক ব্যবহার না থাকার কারণে খামারিরা এর থেকে আয় করতে পারছে না। আমরা এই প্রাজতির ভেড়া রপ্তানির উদ্যোগ গ্রহন করেছি।

 

তথ্যসূত্রঃ আধুনিক কৃষি খামার