খুব সহজে কোটিপতি হতে চাইলে চাষ করুন শ্বেত চন্দন, এক কেজির দাম ১৫ হাজার টাকা

একটি অত্যন্ত দুর্লভ ও দামি গাছের নাম শ্বেতচন্দনগাছ। দেশে ও দেশের বাইরে এর চাহিদা প্রচুর। কিন্তু যথেষ্ট চাহিদা স্বত্ত্বেও এই গাছের উৎপাদন করা যাচ্ছিল না আমাদের দেশে। তবে এখন দেশেই শ্বেতচন্দনের উৎপাদন হবে। এমনটাই জানিয়েছেন গবেষকগণ।

 

 

শ্বেতচন্দন গাছের উৎপাদনে এযাবৎকাল অবধি চেষ্টারও কমতি হয়নি।

কিন্তু প্রতিবার ছয় মাস পার হলেই মারা যাচ্ছিল চারা।

 

 

কিন্তু ব্যার্থ হলেও তারা হাল ছাড়েননি।

বারংবার চেষ্টায় অবশেষে গবেষকদের হাতে কাংখিত সাফল্য ধরা দেয়।

সকলের অক্লান্ত শ্রম ও প্রচেষ্টায় গড়ে তোলা হয়েছে বহুকাঙ্ক্ষিত শ্বেতচন্দনের বাগান।

 

 

বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট বিএফআরআই এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা জানান টানা ১০ বছর চেষ্টার পর এই প্রথম সাফল্য পেয়েছেন।

 

 

এটাই দেশের একমাত্র স্বীকৃত বাগান এমনটাই বলছেন গবেষকরা।

চট্টগ্রামের ষোলশহরে অবস্থিত বন গবেষণাগারে গড়ে তোলা হয়েছে এটি।

 

 

প্রায় ১০০টি গাছের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এই মনোরম শ্বেতচন্দনের বাগান।

ইতিমধ্যে তিন শতাধিক গাছের চারাও বিতরণ করা হয়েছে বাগান থেকে।

 

 

গবেষকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা হয়।

তারা জানান, শ্বেতচন্দন ওষুধ, আসবাব, প্রসাধনী তৈরিসহ নানা কাজে ব্যবহৃত হয়।

 

 

আন্তর্জাতিক বাজারেও এর রপ্তানি চাহিদা রয়েছে।

বৈশ্বিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চ।

 

 

তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২০ সালে বৈশ্বিক চন্দন কাঠের বাজার ছিল ২৪ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার।

টাকায় যার পরিমান২ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা।

 

 

আগামী ২০২৭ সালে এই বাজার ৪৫ কোটি ৫৭ লাখ ডলারে উন্নীত হবে।

যার পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা।

 

 

প্রতিবছর গড়ে ৯.৪০ শতাংশ হারে এর বাজার বেড়ে চলেছে।

এই বাজারের একটি বড় অংশ ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার দখলে রয়েছে।

 

 

প্রকৃতিতে সাধারণত দুই জাতের চন্দনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

একটি সাদা চন্দন বা শ্বেতচন্দন, অন্যটি রক্তচন্দন বা লাল চন্দন।

 

 

শ্বেতচন্দন এর আকার ছোট থেকে মাঝারি ধরনের হয়।

চিরহরিৎ এ বৃক্ষটি সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ভারতে।

 

 

এ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশে এটি জন্মে।

এই সুগন্ধি গাছ এর চারা বেলে দোআঁশ মাটিতে ভালো হয়।

 

 

পূর্ণাঙ্গ গাছের উচ্চতা হয় ২০ থেকে ৩৫ ফুট।

এ জাতের গাছ অবশ্য আংশিক পরজীবী ধরনের তবে এরা শতবর্ষী হয়ে থাকে।

 

 

শ্বেতচন্দনগাছের চারা উৎপাদনে চেষ্টা প্রথম শুরু হয় ২০১২ সালে।

পরে বিস্তৃত পরিসরে কাজ করার জন্য ২০১৫ সালে একটি কর্মসূচী নেয়া হয়।

 

 

এর নামকরণ করা হয় ‘শ্বেতচন্দন নার্সারি ও বাগান উত্তোলন কৌশল’।

বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তুষার রায়।

 

তিনি বলেন, অনেকভাবে চেষ্টার পরেও শ্বেতচন্দনের কোনো চারা ছয় মাসের বেশি বাঁচানো সম্ভব হয়নি।বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং গবেষণার পর বুঝতে পারেন, শ্বেতচন্দনের চারা ছয় মাসের বেশি নিজ থেকে খাদ্য সংগ্রহে অক্ষম।

 

 

পরবর্তীতে অন্য একটি গাছের সহায়তায় একে বাঁচানোর চেষ্টা করেন তাঁরা।২০১৭ সালের পর ভারত ও সিলেট থেকে দুটি গাছের থেকে বীজ আনেন।এতে চার-পাঁচটি চারা বড় করা সম্ভব হয় যদিও চারার পাশে ঝাউসহ বিভিন্ন গাছ রাখা হয়।

 

 

এর পর ২০২১ সালের জুন মাসে বিএফআরআই নিজস্ব পাহাড়ে এক বছরের বেশি বয়সী ১০০টি চারার একটি বাগান তৈরি করে।

 

তথ্যসূত্রঃ এগ্রো বিডি ২৪