এই গাছ বিক্রি করে অন্তুর আয় মাসে ১ থেকে ৩ লাখ টাকা

অ্যাডেনিয়ামের আদি মাতৃভূমি দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার মরুভূমি, সুদান, কেনিয়া, সেনেগালের পশ্চিমাঞ্চল, ইয়েমেন পর্যন্ত বিস্তৃত। এ ছাড়া উদ্ভিদটি প্রাকৃতিকভাবে শ্রীলঙ্কাতেও আছে। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হচ্ছে থাইল্যান্ডে।

 

 

এরপরের অবস্থানে আছে ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ফিলিপাইন, জাপান থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ। মরুর গোলাপ নামে পরিচিত এ অ্যাডেনিয়াম এখন শোভা পাচ্ছে রাজশাহীর শওকত হোসেন অন্তুর ছাদবাগানে।

 

 

অন্তু স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ থেকে। আর পিএইচডি করেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ থেকে। ফলে উদ্ভিদ সম্পর্কে তার পাকাপোক্ত ধারণা আছে। খুব ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন জাতের গাছের সঙ্গে তার সখ্যতা।

 

 

বাড়ির বারান্দায় তখন থেকেই টবে ফুল চাষ করতেন। বিভিন্ন জাতের ও আকৃতির গাছ পছন্দ করতেন তিনি। তবে ২০১৫ সালের পর থেকে অ্যাডেনিয়ামকেই একমাত্র গাছ হিসেবে বেছে নিয়ে তাতে পুরোপুরি মনোযোগ দেন।

 

 

এ জন্য তিনি ফুলপ্রেমীদের কাছে ‘অ্যাডেনিয়াম অন্তু’ নামে পরিচিত। তিনি এ গাছ থাইল্যান্ড, চীন ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করেন। এরপর তা অনলাইনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন।

 

 

গাছের আকৃতি ও জাত অনুযায়ী একেকটি গাছ বিক্রি হয় ১০০ টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত। মাসে তিনি ১ থেকে ৩ লাখ টাকার গাছ বিক্রি করেন। রাজশাহী মহানগরীর কাজলা এলাকার ছয়তলা নিজ বাসভবনের ছাদে গড়ে তুলেছেন অ্যাডেনিয়ামের বিশাল ভুবন। তার ছাদবাগানে অ্যাডেনিয়ামের জাত আছে পাঁচ শ’র মতো।

 

 

গাছ আছে ১০ হাজারের বেশি। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ৫০ লাখ টাকা হবে বলে জানান তিনি। অন্তুর দাবি, বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অ্যাডেনিয়ামের সংগ্রহ তারই।

 

অন্তু জানান, এপোচাইনেসি পরিবারভুক্ত গাছটি বাংলাদেশে সাধারণত শীতের পর থেকে শীতের আগ পর্যন্ত অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অবিরাম ফুল দিয়ে থাকে। ফুলের রং গোলাপি থেকে লাল ও সাদা বর্ণের। এখন অনেকে মিক্সড কালারও করছেন প্রচুর।

 

 

ফুলের কারণেই বাংলাদেশে এ গাছটির চাহিদা বেশি। তবে শীতকালে গাছে কোনো ফুল ধরে না। অন্তু আরও জানান, অ্যাডেনিয়াম গাছটি খুবই খরা-সহনশীল। এটি কান্ড ও শাখা-প্রশাখায় প্রচুর পানি ধারণ করে রাখতে পারে, যা খুব অল্প বৃষ্টিপাত ও খরার সময় ব্যবহার করে প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পারে।

 

 

এর বৈশিষ্ট্য ও বাহ্যিক গঠনপ্রকৃতি অত্যন্ত আকর্ষণীয় এবং প্রাকৃতিকভাবেই এটি বনসাই প্রকৃতির বলে খরাপ্রবণ এলাকায় টবে চাষ করার জন্য খুবই উপযুক্ত একটি গাছ।

 

 

সাত-আট দিন পর টবে অল্প কিছু পানি দেওয়া ছাড়া আর তেমন পরিচর্যা লাগে না। অন্তু জানান, ভবিষ্যতে তিনি বিভিন্ন জাতের ফুলের ফার্ম গড়ে তুলতে চান। এরই মধ্যে ফার্মের জন্য জমি খোঁজার কাজ শুরু করে দিয়েছেন।

 

তথ্যসূত্রঃ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন