দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায় কোয়েল পাখির খামার গড়ে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছেন এবং অনেকের সংসারে ফিরেছে আর্থিক স্বচ্ছলতা। কম মূল্যে, স্বল্প জায়গায়, কম খাদ্যেই সহজে কোয়েল পাখির খামার করা যায়।
কোয়েল পাখির ডিম ছাড়াও কোয়েল পাখি মাংসের জন্যও বিক্রি করে আয় করা যায়। এছাড়াও রোগবালাই কম এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অন্য পোল্ট্রির চেয়ে বেশি হওয়ায় লাভজনক এই কোয়েলের খামার দিনাজপুরে দিন দিন বাড়ছেই। কোয়েল পালন করে স্বনির্ভর কর্মসংস্থান তৈরির মাধ্যমে বেকার সমস্যা দূর করা সহজ হয়।
কোয়েলের মাংস ও ডিম অত্যন্ত সুস্বাদু এবং গুণগতভাবে উৎকৃষ্ট। ডিমে কোলেস্টেরল কম এবং প্রোটিনের ভাগ বেশি। তাই ডিমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
খামারীরা বলেন, বাঁশ-কাঠ দিয়ে খাঁচাতেও এই কোয়েল পাখি পালন করা যায়। আবার ঘরের মধ্যে মেঝেতে পালন করা যায়। এক্ষেত্রে ঘরে আলো বাতাস পর্যাপ্ত চলাচল থাকতে হবে।
মেঝেতে কোয়েল পাখির বিছানা হিসেবে সাধারণত ধানের তুষ, কাঠের গুঁড়া, ধান বা গম মাড়াই করার পর বের হওয়া শুকনো খড়ের টুকরো ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।
গত ৯ মাস আগে প্রথম ৪০টি কোয়েল পাখি নিয়ে খামার গড়ে তোলেন দিনাজপুর সদরের উলিপুরের আসাদুজ্জামান লিটন। বর্তমানে তার খামারে ছোট-বড় নিয়ে দেড় হাজার কোয়েল পাখি রয়েছে। এখন প্রতিদিন ডিম পাওয়া যায় ৮০০টি।
বাজারে কোয়েল পাখির ডিম পাইকারী প্রতি এক‘শ’ ২৫০টাকা। আর খুচরা বিক্রি প্রতি হালি ১২টাকা। একটি কোয়েল পাখি প্রকারভেদে ৩৫-৬০ টাকায় বিক্রি হয়। একটি কোয়েল পাখি ৫০-৫৫ দিনের মধ্যে ডিম পাড়ে।
খামারী আসাদুজ্জামান লিটন জানায়, প্রতি মাসে শুধুমাত্র ডিম বিক্রি থেকে কোয়েল পাখির খাবার খরচ মিটিয়ে লাভ করা যায়। কোয়েল পাখির রোগ বালাই কম। দৃঢ় মনোবল ও ধৈয্য থাকলেই বাড়িতে বসেই যে কেউ একটু যত্ন নিলে কোয়েল পাখি বা তার ডিম বিক্রি করে অনায়াসে লাভ করা সম্ভব।
তাছাড়া মুরগির তুলনায় কোয়েলের দেহের মাংসের ওজন আনুপাতিকহারে বেশি হয়। কোয়েলের বেঁচে থাকার হার মুরগির তুলনায় বেশি। এ কারণে লাভজনক এই কোয়েল পালনে যে কেউ স্বাবলম্বী হতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, তার কোয়েল পাখির খামারের লাভ থেকে চীনা মুরগীর খামারও গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। বর্তমানে ১২টি বড় চীনা মুরগী এবং ৫০টি ছোট চীনা মরগী রয়েছে বলে জানান তিনি। তবে পোল্ট্রি খাবারের দাম কম হলে আরও বেশী লাভবান হওয়া যেত।
তথ্যসূত্রঃ আধুনিক কৃষি খামার