গরু মোটাতাজাকরণে ঈশ্বরদীর খামারিদের ভাগ্য বদল

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে ঈশ্বরদীর খামারিরা। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে দেশি ও বিদেশি জাতের গরু হৃষ্টপুষ্ট করছে খামারি ও কৃষকেরা। বেকার যুবকরা এই পদ্ধতিতে গরু লালন পালন সচ্ছলতা ফিরেছে পরিবারে।

 

 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানা যায়, ঈশ্বরদীতে ২,০৯৩টি গরুর বাণিজ্যিক খামার রয়েছে। তার মধ্যে অনেক খামারি উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে।

 

 

দাশুড়িয়া ডিগ্রি পাড়ার গ্রামীণ এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী মহরম হোসেন বলেন, দেশি জাতের ছোট ছোট প্রায় ১০০ গরু দিয়ে খামার শুরু করি। ৬ মাসের ব্যবধানে কয়েকটি গরু দ্বিগুণ দামে বিক্রি করি।

 

 

তাছাড়া সামনে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে আরও কিছু গরু মোটাতাজাকরণ করছি। নিয়মিত ভাবে ভেটেনারি অফিসাররা ও চিকিৎসকরা আমার খামার পরিদর্শন করছে।

 

 

মুলাডুলির সরইকান্দি গ্রামের হৃষ্টপুষ্টকরণ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত খামারি শাহিনুল আলম বলেন, সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে সঠিক পদ্ধতিতে আমার খামারের ১৬ গরু মোটাতাজাকরন করেছি।

 

 

চার মাস আগে গরু গুলো ১০০ থেকে ১১০ কেজি ওজনের কিনেছিলাম। বর্তমানে গরু গুলো ২০০ কেজি ওজনের। আশা করছি এই ঈদে ভঅলো দামে বিক্রি করবো।

 

 

চরমিরকামারী গ্রামের কিতাব প্রামানিক বলেন, ছয়মাস হয়েছে চারটি গরু কিনেছি। কোরবানির ঈদে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করা যাবে। বংশ পরম্পরায় গরু পালন করে আসছি।

 

 

সলিমপুর ইউনিয়নের ভেটেনারি ভ্যাকসিনেটর ও মাঠকর্মী ইলিয়াস হোসেন বলেন, গরু খামারে আনার পর ভেটেরিনারি চিকিৎসক দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে কোনো রোগ ব্যাধি থাকলে চিকিৎসা করাতে হবে। এক সপ্তাহ পর গরুকে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে।

 

 

এরপর হৃষ্টপুষ্টকরণ পদ্ধতিতে শর্করা জাতীয় খাদ্য ভুট্টা, গম, চালের গুঁড়া, গমের ভুসি, খেসারি ভাঙানো, আমিষ জাতীয় খাদ্য সয়াবিন মিল, তিল খৈল, মিটমিল, ভিটামিন জাতীয় খাদ্য, খনিজ জাতীয় খাদ্য, ক্যালসিয়াম, ফসফেট, রকসল্ট, লবণ মিশ্রণ করে গরুকে খাওয়াতে হয়।

 

 

এছাড়া খামারিদের সাধ্য অনুযায়ী শাকসবজি ও কৃত্রিম ভিটামিন খাওয়ানো যেতে পারে। পাশাপাশি খড়, সবুজ বা কাঁচা ঘাস এবং হজমের জন্য চিটাগুড় খাওয়াতে হয়।

 

 

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, আধুনিক হৃষ্টপুষ্টকরণ পদ্ধতি প্রকল্পের আওতায় খামারি ও কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তারা সহজেই এ পদ্ধতিতে ষাঁড় জাতীয় গরু পালনে উৎসাহিত হচ্ছেন। অল্প সময়ে অধিক লাভের পাশাপাশি দেশের মাংসের চাহিদা পূরণেও এ পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

 

তথ্যসূত্রঃ আধুনিক কৃষি খামার