২২ লাখ টাকার ময়ূর বিক্রি করলেন শাহ আলী

কুমিল্লার হোমনায় ব্যক্তি উদ্যোগে ময়ূরের খামার করে চমকে দিয়েছেন মো. শাহ আলী। তিনি হোমনার বাবরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। শাহ আলী এখন অর্ধকোটি টাকার মালিক। জানা গেছে, অষ্টম শ্রেণি পাশ করা শাহ আলীর স্বপ্ন ছিল ময়ূর পোষা।

 

 

২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে শখেরবসে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি পুরুষ ও একটি নারী ময়ূর কিনে পোষা শুরু করেন। পরবর্তীতে ময়ূরটি ১৮টি ডিম দেয় । এ ডিম থেকে ১২টি বাচ্চা ফোটে। বর্তমানে তার খামারে ৯০টি ময়ূর রয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ২৫ লাখ টাকা। এর আগে তিনি ময়ূর বিক্রি করে পেয়েছেন ২২ লাখ টাকা।

 

 

শাহ আলী জাগো নিউজকে বলেন, ছোটবেলায় ঢাকার মিরপুরে ভাড়া বাসায় পাখি লালন-পালন করতাম। বাবা মারা যাওয়ার পর গ্রামের বাড়িতে এসে দুটি টিনশেড ঘর তৈরি করে ২০১৯ সালে প্রথমে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে ১ জোড়া ও পরবর্তীতে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে পাঁচটি ময়ূর ক্রয় করে খামার গড়ে তুলি। যার মধ্যে ৫টি নারী ও ২টি পুরুষ ময়ূর ছিল। ৭টি ময়ূর থেকে ডিম বাচ্চা ফুটিয়ে বর্তমানে আমার খামারে ৯০টি ময়ূর রয়েছে।

 

 

তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত সর্বমোট তার ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এরই মধ্যে ২২ লাখ টাকার ময়ূর বিক্রি করেছি। প্রায় আরও ২৫ লাখ টাকার ময়ূর আমার খামার রয়েছে। এটি সৌখিন জিনিস, অনেকে শখেরবসে কিনে নিয়ে যান। এক জোড়া বড় ময়ূর বিক্রি করেছি সর্বোচ্চ ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। আমার ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে ময়ূরের খামার করার স্বপ্ন রয়েছে।

 

 

যারা ময়ূরের খামার করতে আগ্রহী তাদের উদ্দেশ্যে শাহ আলী বলেন, ময়ূর লালন-পালন খুবই সহজ। এটা সৌখিন জিনিস। কেউ ভুল করে আগে খামারের পরিকল্পনা করবেন না। শুরুতে দুই-এক জোড়া পালন করে যদি ভালো মনে করেন তাহলে খামার করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত। ময়ূর যখন-তখন বিক্রি করা যায় না। মানুষের পছন্দ হলে কিনবে। যারা বেকার রয়েছেন বা চাকরি খোঁজেন তারা চাইলে শখেরবসে ময়ূর পালন করতে পারেন। আমি যেহেতু লাভবান হয়েছি, আপনারাও হবেন। এ বিষয়ে যে কোনো পরামর্শ দিতে আমি প্রস্তুত।

 

 

এদিকে শাহ আলীর এই ময়ূরের খামার দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা। আবুল কালাম নামে এক দর্শনার্থী জাগো নিউজকে জানান, টিভিতে ময়ূর দেখেছি। আজ বাস্তবে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শাহ আলীর এই ময়ূরের খামার দেখতে এসেছি। খামার দেখে আমরা আনন্দিত।

 

 

হোমনা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এ কে এম বাহারুল ইসলাম জগো নিউজকে বলেন, শাহ আলীর ময়ূর খামারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে নিয়মিত পরামর্শ, খামার পরিদর্শন ও সার্বিক সহযোগিতা করার কাজ অব্যাহত রয়েছে। ময়ূরের পাশাপাশি তিনি গরু, ভেড়া, তিতির পাখি ও কোয়েল পালন করছেন।

 

 

এবিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সৈয়দ মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এটি জেলার প্রথম ময়ূরের খামার। কেউ শাহ আলীর মতো ময়ূরের খামার করতে চাইলে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে সবধরনের সহযোগিতা করা হবে।

 

তথ্যসূত্রঃ জাগো নিউজ ২৪