পেঁপে চাষে সফল প্রবাসী সোহেল, ৯ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রির আশা

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের দুর্গাপুরে ফিসারির পাড়ে রেড লেডি জাতের পেঁপে গাছ লাগিয়ে বিপ্লব ঘটিয়েছেন ইংল্যান্ড প্রবাসী সোহেল চৌধুরী।

 

 

নিজে দেশের বাইরে থেকেও স্থানীয় কর্মীদের কাজে লাগিয়ে তার এ সফলতা এলাকায় সাড়া জাগিয়েছে।

 

 

৮শ পেঁপে চারায় সোহেল চৌধুরী নিজে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি সেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে আরও ছয়জন কর্মীর। এতে স্থানীয় আরও কৃষক তাকে অনুসরণ করছেন।

 

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, দুর্গাপুরে কুশিয়ারা নদীর তীর ঘেঁষা সোহেল চৌধুরীর ফিসারিটির চার পাড়ে ৮শ পেঁপের চারা লাগানো হয়েছে। গাছগুলো ফলে ভরপুর। সেখান কাঁচা-পাকা ও ছোট-বড় পেঁপের সমাহার।

 

 

সেলিম আল মামুনের নেতৃত্বে ছয়জন কর্মী কাজ করছেন। বাগানে কর্মরতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাগানটির বয়স ১৩ মাস। চলতি মাসে ৮০ হাজার টাকার ফল বিক্রি হয়েছে। তারা গাছ পাকা পেঁপে সিলেটে নিয়ে বিক্রি করেন। এক কেজি পেঁপের দাম ৪৫ থেকে ৬৫ টাকা।

 

 

চারা রোপনের ছয় মাস বয়স থেকে ফল বিক্রি শুরু হয়েছিল। এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকার পেঁপে বিক্রি হয়েছে। আগামী চার মাসে আরও ৩ লাখ টাকার ফল বিক্রি করা সম্ভব।

 

 

এই পর্যন্ত সোহেল চৌধুরীর খরচ হয়েছে দেড় লাখ টাকা। জমিটিতে প্রবাসীর এমন বিনিয়োগে লোকজন হাসি-ঠাট্টা করলেও এখন তার কাছ থেকে পেঁপের জাত ও যত্ন-পদ্ধতি সম্পর্কে জানার জন্য আসেন।

 

 

নবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একে এম মাকসুদুল আলম জানান, দেশি জাতের পেঁপের ক্ষেত্রে পুরুষ গাছের সংখ্যা বেশি হয়ে যায়। কিন্তু সোহেল চৌধুরীর বাগানের রেড লেডি জাতটি তাইওয়ানের উচ্চ ফলনশীল বামন প্রজাতির হাইব্রিড গাছ।

 

 

গাছগুলোর ৯০ শতাংশই স্ত্রী। বাণিজ্যিক বাগানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় জাত এটি। শতকরা ৫-১০টি পুরুষ গাছ পরাগায়নে সহায়তা করে।

 

 

রেড লেডির দুই গ্রাম বীজের প্রতি প্যাকেট ৫৫০-৬৫০ টাকায় কিনতে পাওয়া যায়। প্রতি গ্রামে এতে ৬০-৭০টি বীজ পাওয়া যায়। বীজের অংকুরোদগমের হার ৭৫-৯৫ শতাংশ। ১ হেক্টর জমিতে ৩০০০-৩২০০ পেঁপে চারা লাগানো যায়।

 

 

তিনি আরও জানান, আশ্বিন ও পৌষ মাস পেঁপের বীজ বপনের উত্তম সময়। বপনের ৪০-৫০ দিন পর চারা রোপনের উপযোগী হয়।

 

 

পেঁপে গাছে সাধারণত ৫-৬ মাসের মধ্য ফুল আসে এবং প্রথম ফল পাওয়া যায় ৬-৭ মাসের মধ্যে। রেড লেডি জাতের প্রতিটি পেঁপে গাছ থেকে প্রায় ৫০ থেকে ১২০টি ফল পাওয়া যায়। একেকটি ফলের ওজন দেড় থেকে দুই কেজি হয়ে থাকে।

 

তথ্যসূত্রঃ বাংলা নিউজ ২৪