শিং ও কৈ মাছ চাষে অধিক লাভজনক হবার উপায়

শিং ও কৈ মাছ চাষে ঝুঁকি দূর করার উপায় মৎস্য চাষিদের ভালোভাবে জেনে রাখতে হবে। দেশের প্রাকৃতিক উৎসগুলোতে আগের মতো এখন আর তেমন মাছ পাওয়া যায় না। তাই অনেকেই পুকুর কিংবা ছোট-বড় জলাশয়ে মাছ চাষ করছেন।

 

 

মাছ চাষের মাধ্যমে অনেকেই নিজেরকে স্বাবলম্বী করে তুলছেন। তবে মাছ চাষে কিছু ঝুঁকির সৃষ্টি হয়ে থাকে। আসুন আজকে জেনে নিব শিং ও কৈ মাছ চাষে ঝুঁকি দূর করার উপায় সম্পর্কে-

 

 

শীতে (১৫০ সে: তাপের নীচে) বিশেষ করে কৈ মাছ চাষে রোগের প্রাদূর্ভাব বেশি হয়, সে জন্য শীতের ২-৩ মাস কৈ মাছ চাষ না করাই ভাল। তবে এ সময়ে মাছ বা পোনা সংরণের জন্য পানির তাপমাত্রা বাড়িয়ে রাখার নিমিত্ত প্রতি দিন ভোরে গভীর নলকূপ-এর পানি দেয়া যেতে পারে।

 

 

বর্ষাকালীন ঝুঁকিঃ

বর্ষাকালীন অতিবৃষ্টি বা বন্যায় পুকুরের পাঁড় ভেসে গিয়ে চাষকৃত মাছ বেরিয়ে যেতে পারে। হালকা গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে পরিপক্ক কৈ ও মাগুর মাছ পানির স্রোতের ওপর ভর করে পুকুরের পাড় বেয়ে অন্যত্র চলে যেতে পারে। এ কারণে পুকুরের পাড়ে চারিদিকে বাঁশের বানা বা বেড়া অথবা প্লাস্টিক নেটের সাহায্যে ১.৫ ফুট উচু করে বেষ্টনির ব্যবস্থা করতে হবে।

 

 

শুষ্ক মৌসুমের ঝুঁকিঃ

শুষ্ক মৌসুমে পুকুরের পানি শুকিয়ে পানির গভীরতা কমে পানির ঘনত্ব বেড়ে মাছের দৈহিক বৃদ্ধি বাঁধা গ্রস্ত হতে পারে। এতে পানির তাপমাত্রা বেড়ে পানিতে দ্রবিভূত অক্সিজেন স্বল্পতার সৃষ্টি হতে পারে। পানি সরবরাহের মাধ্যমে পানির গভীরতা বাড়িয়ে পুকুরের প্রতিবেশ সহায়ক করতে হবে।

 

 

মাছ চুরিঃ

এটা একটি সাধারণ সমস্যা বা সামাজিক ঝুঁকি। পুকুরের মাছ বড় হলে এ ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই বড় মাছগুলো আহরণ করলে চুির হওয়ার সম্বাবনা কমে যায়। এ ছাড়াও মাছ চাষিকে সমাজের অন্যদের সাথে উত্তম সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে এবং ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক দ্বন্দ্ব এড়াতে হবে। উৎপাদিত মাছ থেকে পুকুরের পার্শ্বে বসবাসকারীদের সৌজন্যমূলক কিছু মাছ বিতরণ করা যেতে পারে।

 

 

ক্ষতিকর গ্যাসঃ

খাদ্যের অবশিষ্টাংশ এবং মাছের মলমূত্রের কারণে পুকুরের তলদেশে তিকর গ্যাস জমে বুদবুদের সৃষ্টি করতে পারে এবং পানিতে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হতে পারে। পুকুরের তলদেশে জমে থাকা তিকর গ্যাস অপসারণের জন্য ২-৩ দিন পর পর দুপুরের সময় পানিতে নেমে তলদেশ আলোড়িত করার ব্যবস্থা করতে হবে। কাজটি হরÍা টেনেও করা যায়। শতকে ২৫০ গ্রাম হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে। তিকর গ্যাসের উপস্থিতির সমস্যা প্রকট আকাররূপে দেখা দিলে জিওনেক্স প্রয়োগে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

 

তথ্যসূত্রঃ আধুনিক কৃষি খামার