যে সহজ কিছু কৌশলে আপনি গোয়াল ঘর পরিস্কার করবেন

গোয়াল ঘর বা গরুর রাখার স্থান পরিষ্কার করার সহজ ও কার্যকরী পন্থা আমাদের অনেকেরই জানা নেই। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের গামগুলোতে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই গরু পালন করা হচ্ছে। আবার কেউ কেউ গরুর খামার গড়ে তোলার মাধ্যমে নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলছেন।

 

 

গরু পালনে গরুর থাকার স্থান তথা ঘর পরিষ্কার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে সহজ উপায়ে গরুর ঘর পরিষ্কার করা সম্পর্কে অনেকের মধ্যেই কোন ধারণা নেই। চলুন তাহলে আজকে জেনে নেই গরুর ঘর পরিষ্কার করার সহজ ও কার্যকারী পন্থা সম্পর্কে-

 

 

গরুর ঘর পরিষ্কার করার সহজ ও কার্যকরী পন্থাঃ

বিশেষজ্ঞদের মতে, যত ভালো মানের ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক গবাদিপশুকে দেওয়া হোক না কেন ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের ক্ষেত্রে সেটা সর্বোচ্চ ৫৫% এবং ভাইরাস জনিত রোগে সর্বোচ্চ ৮৫% ভাগ কার্যকরী।

 

 

অনেকেই বলেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার পরেও রোগ কেন হয়?

ভ্যাকসিনের গুণগত মানের বিষয় যেমন একটা কারণ, তেমনি সঠিকভাবে পরিচ্ছন্নতার অভাবেও সেটা হতে পারে। ভ্যাকসিন দেয়ার পরেও ৪৫ এবং ১৫ ভাগ ঘাটতি বা অরক্ষিত থেকেই যায়।

 

 

ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস কোষপ্রাচীর বা ক্যাপসূলের মতো এক রকম তরল আবরণ দ্বারা নিজেকে সুরক্ষিত করে রাখে, অনুকূল পরিবেশ বা সুযোগের অপেক্ষায়। এভাবে ৫০ বছর পর্যন্তও বেঁচে থাকতে পারে। ১০০ ডিগ্রি তাপমাত্রাতেও এদের কিছুই হয়না।

 

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রেশার কুকারে ৪ ঘন্টা ফুটানোর পরে, এরা মরে। কিন্তু সোডিয়াম কার্বনেটের স্পর্শে আসলে এদের বহিরাবরণ ছিদ্র হয়ে যায়। তখন এরা আর কার্যকরভাবে ক্ষতি করতে পারে না, পরবর্তীতে মরে যায়।

 

 

তড়কা বা এনথ্রাক্স রোগসহ অনেক রোগের জীবানু মাটি, পানি, ঘাসের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়ে প্রাণীদেহে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।

 

 

গবাদিপশুর বাসস্হান নিয়মিত স্বাভাবিকভাবে পরিস্কার করার পাশাপাশি সপ্তাহে কমপক্ষে ১ দিন সোডিয়াম কার্বনেট দিয়ে ভালোভাবে পরিস্কার করতে হবে। এতে তড়কার মতো রোগসহ অনেক প্রকার জীবানু ধ্বংস হবে। শুধু মেঝে নয়, ঘরের দেয়াল, খাবারের পাত্র গুলোও একইভাবে পরিস্কার করতে হবে। এতে ৩০% রোগজীবাণু থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। সোডিয়াম কার্বনেট ব্যবহৃত হয় গুড়া সাবানে, তাই বাজারের সবচেয়ে সস্তা গুড়া সাবান দিয়ে পরিস্কার করলেও হবে।

 

 

পরিমাণ ও ব্যবহারঃ

২৫ লিটার পানিতে গুড়া সাবানের মান অনুযায়ী ১০০-২০০ গ্রাম মিশাতে হবে। সরাসরি সোডিয়াম কার্বনেট হলে, ১০০ গ্রাম হলেই হবে। স্বাভাবিকভাবে পরিস্কার করার পর সবার শেষে এই পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে দিতে হবে। এরপর আর কোন পানি ব্যবহার করা যাবে না।

 

 

গবাদিপশুকেও এই সাবান মিশ্রিত পানি দিয়ে ভালো করে গোসল করালে খুবই ভালো ফল পাওয়া যাবে। গরু এই পানি কিছুটা খেয়ে ফেললেও ক্ষতি নেই। ঘর পরিষ্কার করার যাবতীয় দ্রব্যাদি যেমন, ঝাড়ু, কোদাল ইত্যাদি ভালো করে নিয়মিত ধোঁয়ার পরে এই সাবান মিশ্রিত পানিতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখবেন।

 

 

সাধারণ রোগজীবাণুর পাশাপাশি পোকা মাকড়, মাছির প্রকোপও কমে যাবে এতে। এছাড়া মেঝে যাতে সবসময় ভেজা না থাকে সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। ড্রেনগুলোতে ব্লিচিং পাউডার ও ফিনাইল দিলেও মশা মাছির উপদ্রব কমবে।

 

তথ্যসূত্রঃ vetcare24 ও আধুনিক কৃষি খামার