দেশীয় পদ্ধতিতে কিভাবে মোরগ পালন করবেন?

দেশীয় পদ্ধতিতে মোরগ পালন করার কৌশল খামারিদের ভালোভাবে জেনে রাখা উচিত। বর্তমানে অধিক লাভের আশায় অনেকেই তাদের খামারে বা বাড়িতে মুরগি বা মোরগ পালন করে থাকেন। আজকের এই লেখাতে আমরা জেনে নিব দেশীয় পদ্ধতিতে মোরগ পালন করার কৌশল সম্পর্কে-

 

 

দেশি মোরগ আবদ্ধ ও ছেড়ে পালন করা যায়। তবে ছেড়ে পালন করলে বেশি লাভবান হওয়া যায় কারন মোরগ নিজের খাদ্য নিজে কুড়িয়ে খায়। এরা মুক্ত আলো-বাতাস বিশেষ করে প্রচুর সূর্য কিরণে বেড়ে উঠে যা তাদের শরীরে ভিটামিন ‘ডি’ তৈরি করতে সাহায্য করে। এদের খাবারের জন্য তেমন কোন খরচ করতে হয় না।

 

 

মোরগ নির্বাচনঃ

দেশি মোরগ বা মুরগির বাচ্চা উৎপাদনের জন্য তেমন কোন হ্যাচারি গড়ে ওঠেনি তাই নিজেকে ই দেখে শুনে সুস্থ সবল ও নিরোগ মোরগ সংগ্রহ করতে হবে। মূলত ৪০০-৬০০ গ্রামের মোরগ দিয়ে শুরু করলে ভাল ফলাফল আশা করা যায়। কারন ঐ সময়ের পর মোরগ গুলো দ্রুত বাড়ে এবং সঠিক ব্যবস্থাপনা ও পরিচর্যা পেলে ২ মাস পর মোরগ গুলোর গড় ওজন ২ কেজির উপর হবে। প্রতি কিলো দেশি মোরগের মূল্য কেমন আছে সেটা নাই বা বললাম। আপনারা নিজেরা লাভ-ক্ষতি বের করে নিন।

 

 

ঘর তৈরিঃ

মোরগের জন্য খোলামেলা ঘর হতে হবে। ১.৫ মিটার (৫ ফুট) লম্বা X১.২ মিটার (৪ ফুট) চওড়া এবং ১ মিটার (৩.৫ ফুট) উঁচু ঘর তৈরি করতে হবে। ঘরের বেড়া বাঁশের তরজা বা কাঠের তক্তা দিয়ে তৈরি করতে হবে। এছাড়া মাটির দেয়ালও তৈরি করা যাবে। বেড়া বা দেওয়ালে আলো বাতাস চলাচলের জন্য ছিদ্র থাকতে হবে। ঘরের চাল খড়, টিন বা বাঁশের তরজার সাথে পলিথিন ব্যবহার করে তৈরি করা যাবে। এরকম ঘরে ১০-১৫টি মোরগ পালন করা যায়।

 

 

খাদ্যঃ

বাড়ির প্রতিদিনের বাড়তি বা বাসী খাদ্য যেমন ফেলে দেওয়া এঁটোভাত, তরকারি, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গম, ধান, পোকামাকড়, শাক সবজির ফেলে দেওয়া অংশ, ঘাস, লাতা পাতা, কাঁকর, পাথর কুচি ইত্যাদি মুরগি কুড়িয়ে খায়।

 

 

পরিচর্যাঃ

ছেড়ে পালন পদ্ধতিতে মুরগি পরিচর্যার জন্য সময় বা লোকজনের তেমন দরকার পড়ে না। তারপরও কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়। সকালে মুরগির ঘর খুলে কিছু খাবার দিতে হবে। সন্ধ্যায় মুরগি ঘরে ওঠার আগে আবার কিছু খাবার দিতে হবে। ঘরে উঠলে দরজা বন্ধ করে দিতে হবে।মুরগির পায়খানা ঘরের মেঝেতে যেন লেপ্টে না যায় সেজন্য ঘরের মেঝেতে ধানের তুষ, করাতের গুঁড়া ২.৫ সে.মি. (১ ইঞ্চি) পুরু করে বিছাতে হবে। পায়খানা জমতে জমতে শক্ত জমাট বেঁধে গেলে বারবার তা উলট-পালট করে দিতে হবে এবং কিছুদিন পর পর পরিষ্কার করতে হবে।

 

তথ্যসূত্রঃ আধুনিক কৃষি খামার