এককভাবে দেশি মাগুর মাছ চাষে করণীয় কি রয়েছে সেগুলো ভালোভাবে জেনেই মাছ চাষ শুরু করা উচিত। বর্তমানে অধিক লাভের আশায় অনেকেই পুকুরে মাছ চাষ করছেন। পুকুরে চাষ হওয়া মাছগুলোর মধ্যে মাগুর অন্যতম। আজকের এই লেখাতে আমরা জেনে নিব এককভাবে দেশি মাগুর মাছ চাষে করণীয় সম্পর্কে-
এককভাবে দেশি মাগুর মাছ চাষে করণীয়ঃ
পুকুর ব্যবস্থাপনাঃ
১। দেশি মাগুর মাছ চাষ করার ক্ষেত্রে ১০-৪০ শতাংশ পুকুর হলে সবচেয়ে ভালো হয়। তাই চেষ্টা করতে হবে এমন পুকুরে মাগুর মাছের চাষ করার জন্য।
৩। দেশি মাগুর মাছ চাষের জন্য পুকুরের তলদেশ সমান হতে হবে। পুকুরের মাটি দোআঁশ কিংবা এটেল হতে হবে। মাছ চাষের পুকুর ময়লা আবর্জনা ও আগাছামুক্ত হতে হবে।
২। দেশি মাগুর চাষের পুকুর কোনভাবেই বন্যায় যেন ভেসে যেতে না পারে সেভাবে পুকুর নির্বাচন ও প্রস্তুত করতে হবে। এছাড়াও মাছের পুকুর পাড়ে ইঁদুর, কুঁচে, কাঁকড়ার গর্ত থাকলে সেগুলো বন্ধ করে ফেলতে হবে। তা না হলে এসব গর্ত দিয়ে মাছ পুকুর থেকে বাহিরে বের হয়ে যেতে পারে।
৫। পুকুরে পানির গভীরতা হতে হবে সর্বনিম্ন ২.৫ ফুট। তবে ৩ থেকে ৫.৫ (১২ ফুট পর্যুন্ত) ফুট জলের গভীরতা বেশি ভালো হয়।
৪। মাগুর চাষের পুকুরে অন্য কোন প্রাণী যেন পুকুরে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে।
৬। পুকুর শুকিয়ে অথবা বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে সকল প্রকার মাছ নিধনের পর, প্রতি শতাংশে ২৫০ থেকে ৫০০ গ্রাম চুন প্রয়োগের দুই থেকে দিন পর প্রতি শতাংশে ৫০ ইউরিয়া ও ১০০ গ্রাম টিএসপি সার সমস্ত পুকুরে ছিটিয়ে দিতে পারেন।
৭। এর ৩ থেকে ৪ দিন পর জীবাণু নাশক, এমুনিয়া নাশক মাত্রানুযায়ী পুকুরে প্রয়োগ পর পুকুরে পোনা মাছ ছাড়া যাবে।
চাষ পদ্ধতিঃ
পরিমাণ অনুযায়ী চাষ-
মাগুরের সংখ্যা,প্রতি শতাংশে ৩০০-৫০০ মাগুর একক চাষ করা যায়।
অধিক ঘনত্বে মাগুর চাষ-
প্রত্যেক শতাংশে ৮০০-১২০০ পিস মাগুর পুকুরে ছাড়া যায়। যখন উক্ত মাছের পোনা গুলো ১৫০ পিচ থেকে ৩০ পিচে কেজি হবে। তখন প্রয়োজনে অতিরিক্ত মাগুর মাছগুলো পোনা আকারে, পিস হিসাবে অথবা মন হিসেবে বিক্রি করতে হবে। এই সময় পর্যন্ত ৩৬% প্রটিন মাত্রার ৬০০ গ্রাম খাদ্য প্রয়োগে এক কেজি মাছ উৎপাদন হয়।
প্রতিমাসে একবার পুকুরে চুন ও লবন প্রয়োগ করতে হবে।
পুকুরের চাষ করা দেশি মাগুরের প্রোটিন মাত্রা ৩২% রাখা ভালো। মাগুর মাছ যখন কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টায় কেজি আসবে তখন ৩২% প্রোটিন।
পানির পিএইচ থেকে ৭.৫ থেকে ৮.৩ রাখতে হবে।এবং অ্যামোনিয়া মুক্ত রাখতে হবে।
প্রতিমাসে একবার করে হলেও জীবাণুনাশক ব্যবহার করা উচিত।
পুকুরে পানির রং সবুজ অথবা হালকা সবুজ রাখতে পারলে ভালো হয়।
তথ্যসূত্রঃ আধুনিক কৃষি খামার