প্রচণ্ড শীতে ছাগল ও ভেড়াকে রক্ষার উপায় আমাদের অনেকেরই জানা নেই। শীতকালে গবাদিপশু নিয়ে খামারিরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে থাকেন। এ সময়ে ঠাণ্ডা লাগাসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। তাই খামারিদেরকেও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। আজকে আমরা জেনে নিব প্রচণ্ড শীতে ছাগল ও ভেড়াকে রক্ষার উপায় সম্পর্কে-
প্রচণ্ড শীতে ছাগল ও ভেড়াকে রক্ষার উপায়ঃ
মাচা তৈরিঃ
শীতের প্রকোপ থেকে ছাগল ও ভেড়াকে রক্ষার জন্য মাচা তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যাদের পক্ষে আধুনিক সেড করা সম্ভব হবে না বা কম পশু পালন করেন তারা কাঠের তৈরি পাটাতন ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ প্রয়োজনে রাজমিস্ত্রির কাজে যে বাঁশের মাচা ব্যবহার করা হয় ঐ গুলো রেডিমেড যে কোন বাজারে পাওয়া যাবে। অনেকে পাটের বস্তা বা খড় মাটিতে দিয়ে রাখেন এটি করলে খরচ বেশি এবং ঐ গুলো ভিজে আরো ঠান্ডা লাগে।
খাদ্য ব্যবস্থাপনাঃ
ছাগল ও ভেড়া পালনে শীতের সময়ে কাঁচা ঘাস আগে যেমন দেওয়া হত তেমন দিতে পারেন । অনেকেই শীতের দিনে পানি খাওয়ানো একদম বন্ধ করে দেন এটি ঠিক না শীতে পানি দিতে হবে এবং অবশ্যই হাল্কা কুসুম গরম পানি দিবেন আর পানি বেশি সময় দিয়ে রাখবেন না এতে ঠান্ডা হবে পানি আর ঠান্ডা পানি পান করলে আরো ঠান্ডা লাগবে। পানির সাথে ৩-৪ ঘন্টা ভিজিয়ে সরিষার খৈল অল্প অল্প শুরু অভ্যাস করান শরিষার খৈলে অধিক প্রোটিনের কারনে শরীর গরম থাকবে।
ভিটামিন ও মিনারেলঃ
শীতের সময়ে ছাগল ও ভেড়ার শরীর গরম রাখার জন্য এবং ধকল কাটিয়ে উঠতে ২-৩ মাস একটু নিয়মিত ভিটামিন, ক্যালিসিয়াম, মিনারেলস, ইত্যাদির যোগান সঠিক ভাবে দিতে হবে। প্রতি ১০ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য হিসেব করে প্রতিটি পশুকে ১ এমএল করে ভিটামিন এডিই৩ সিরাপ একটানা ৫ দিন উপরের খাবারে নিয়ম দেওয়া আছে তার সাথে দিতে হবে এবং কোন অবস্থায় যেন মাত্রা বেশি না হয় এর বেশি হলে পাতলাখানা হবে।
প্রয়োজনীয় তাপঃ
আমাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন উপায়ে খামারে তাপের ব্যবস্থা করেন। কেউ হিটার কেউ ক্লিয়ার বাল্ব ১০০-৫০০ ওয়াটের ব্যবহার করে থাকেন । সরাসরি বেশি ওয়াটের হিটার ব্যবহার করলে অনেক বিদুৎ খরচ লাগে এবং খামারের সকল জায়গাতে একসাথে তাপ পৌছাতে পারে না । আবার অনেকে সরাসরি ক্লিয়ার বাল্ব ব্যবহার করার কারনে খামারে রাতের বেলাতে প্রচুর আলো হয় যার কারনে কিছু কিছু পশু দৌড়াদৌড়ি , চলাফেরা করে এবং যে যে পশু বিশ্রাম নেয় তাদের বিরক্ত করে এতে পশুগুলো সঠিক।
পর্দা ব্যবস্থাঃ
যতক্ষন পর্যন্ত কুয়াশা না কমে ততক্ষন সেডের পর্দা তোলা যাবে না ঘর পরিস্কার করতে হবে প্রর্তিদিন । রৌদ্রে আলোতে কুয়াশা কমলে পশুগুলেকে ছাড়তে হবে এবং বিকালে রৌদ্রের আলো কমার সাথে সাথে সেডের ভিতরে আনতে হবে এরং পর্দা লাগিয়ে আলো আর হিটের ব্যবস্হা করতে হবে।
তথ্যসূত্রঃ আধুনিক কৃষি খামার