শাক সবজি চাষে (কীটনাশক, ছত্রাকনাশক, আগাছানাশক) লাগাম ছাড়া ও মাত্রাতিরিক্ত প্রয়োগ এর ফলে মাটির উর্বরা শক্তি হ্রাস সহ ও বিভিন্ন পরাগযোগী উপকারী পতংগের (যেমন, মৌমাছি, ভ্রমর, বোলতা) সংখ্যাও আগের তুলনায় অনেক হ্রাস পেয়েছে। ফলস্বরূপ বিভিন্ন পতঙ্গ পরাগী (Entomophilous) ফসলের পরাগমিলন (Pollination) প্রভূত বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।
সবজী ফসলের মধ্যে কুমড়োগোত্রীয় ফসল যেমন শসা, লাউ, উচ্ছে, কুমড়ো, ঝিঙ্গে, চালকুমড়ো, চিচিঙ্গা ইত্যাদিও তার ব্যতিক্রম নয়। খুব স্বভাবতই পরাগ যোগের সমস্যার কারণে গাছপ্রতি ফলন উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। অনেকক্ষেত্রে ফল ধরলেও ফলের আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে বা অসম্পূর্ণ পরাগমিলনের কারণে গাছে থাকা অবস্থাতেই অপরিণত ফল হলুদ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে।
‘৩ জি’ কাটিং কি?
‘৩ জি’ (3G) কথাটির ইংরাজিতে আক্ষরিক অর্থ হল ‘Third Generation’, যার বাংলা মানে করলে দাঁড়ায় ‘তৃতীয় প্রজন্ম’।
বীজের অঙ্কুরোদগমের পর, যে কোন গাছের যে প্রাথমিক শাখাটির (Primary branches) জন্ম হয় এবং বৃদ্ধি ও বিকাশ চলতে থাকে, তাকে ‘১ জি’ (First Generation) অর্থাৎ প্রথম প্রজন্মের বা প্রথম বর্গীয় শাখা বলা হয়। প্রাথমিক শাখা থেকে পরবর্তীতে ‘২ জি’ (Second Generation) অর্থাৎ দ্বিতীয় প্রজন্মের শাখা প্রশাখা (Secondary branches) ও ২ জি শাখা প্রশাখা থেকে ‘৩ জি (Third Generation) অর্থাৎ তৃতীয় বর্গীয় (Tertiary branches) শাখা প্রশাখার জন্ম হয়।
‘৩ জি’ কাটিং করার নিয়ম:
‘৩ জি’ কাটিং করার জন্যে প্রধান ডগায় ১২/১৫ পাতা হলে আমরা ডগার মাথা কেটে দিব। পরবর্তীতে প্রধান ডগা থেকে বের হওয়া ডগা গুলো পাতার সংখ্যা ৯/১০ টা হলে আমরা উক্ত ডগার মাথা গুলিও কেটে দিব। পরবর্তীতে ৪/৫ কান্ড বের হবে। উক্ত কান্ড গুলোই আমাদের কাংখিত 3G কান্ড।
৩ জি’ কাটিং করার উপকারিতা:
১ জি’ ও ‘২ জি’ (অর্থাৎ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক) শাখা প্রশাখাগুলিতে পুরুষ ফুলের আধিক্য পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে দেখা গেছে স্ত্রী ও পুরুষ ফুলের অনুপাত ১৪ : ১। আরও সহজভাবে বললে, ১৪ টি পুরুষ ফুল ফুটলে তার পরিপ্রেক্ষিতে ১ টি স্ত্রী ফুল জন্মায়। শতাংশের ভিত্তিতে বলা যেতে পারে, পুরুষ ফুল প্রায় ৮৫-৯০ শতাংশ ও স্ত্রী ফুল ১০-১৫ শতাংশ। কিন্তু আমরা সকলেই জানি, পুরুষ ফুল থেকে ফল সৃষ্টি হয় না। তাই আপাতদৃষ্টিতে গাছ ফুলে পরিপূর্ণ বলে মনে হলেও গাছপ্রতি ফলন হয় অত্যন্ত কম। অন্যদিকে তৃতীয় প্রজন্মের শাখা প্রশাখাগুলিতে অধিক সংখ্যায় স্ত্রী ফুলের দেখা মেলে।
তথ্যসূত্রঃ কৃষি বার্তা ( ফেসবুক পেজ)