বাড়িতেই মাছের খাদ্য তৈরি করার উপায় আমাদের দেশের অনেক মৎস্য চাষিরাই জানেন না। মাছ চাষে খাদ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। খাদ্য প্রদানের ভিত্তিতেই মাছের শারীরিক বৃদ্ধি নির্ভর করে থাকে। আজকের এ লেখায় আমরা জেনে নিব বাড়িতেই মাছের খাদ্য তৈরি করার উপায় সম্পর্কে-
বাড়িতেই মাছের খাদ্য তৈরি করার উপায়ঃ
আপনি সহজেই বাড়িতে মাছের খাদ্য তৈরি করতে পারেন। খাদ্য তৈরির উপকরণ হিসেবে সরিষার খৈল, চালের কুড়া, ধান/গমের ভূঁসি, চেওয়া শুটকির গুড়া ও খণিজ লবণ ব্যবহার করতে পারেন। বাইন্ডার হিসেবে আটা বা মোলাসেস/ চিটাগুড় ব্যবহার করা যায়।
পরিমানমত উপকরণ পানিতে ভিজিয়ে রেখে বল আকারের খাদ্য তৈরি করে পুকুরে প্রয়োগ করা যায়।এছাড়া বাড়িতে গুণগতমানসম্পন্ন পিলেট খাদ্য তৈরি করা যায়।
সম্পূরক খাবার দুইভাবে প্রস্তুত করা যেতে পারে-
ক) বাণিজ্যিক সম্পূরক খাদ্যঃ
বর্তমানে বেসরকারি উদ্যোগে মাছের খাবার বাণিজ্যিক ভাবে প্রস্ত্তত করার জন্য বহু খাদ্য মিল স্থাপিত হয়েছে। এসকল কারখানায় মাছের বয়সের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্নমানের খাবার প্রস্ত্তত করা হচ্ছে। মাছ চাষিগণ তার চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য বাজার থেকে সংগ্রহ করে সহজেই পুকুরে প্রয়োগ করতে পারেন।
খ) খামারে প্রস্ত্ততকৃত সম্পূরক খাদ্যঃ
খামারে আমরা দূভাবে খাদ্য প্রস্ত্তত করতে পারি। বিভিন্ন ধরণের খাদ্য উপকরণ প্রয়োজন মাফিক একত্রে ভালভাবে মিশিয়ে চাষি নিজ হাতেই খাদ্য প্রস্ত্তত করে পুকুরে প্রয়োগ করতে পারেন অথবা খাদ্য প্রস্ত্ততকারী মেশিন এর সাহায্যে বিভিন্ন উপকরণ পরিমাণমত মিশিয়ে চাহিদা অণুযায়ী দানাদার সম্পূরক খাদ্য প্রস্ত্তত করতে পারেন।
খাদ্যে উপকরণসমূহ বাজার থেকে কিনে নিজস্ব পিলেট মেশিন দ্বারা খাদ্য তৈরি করা সবচেয়ে নিরাপদ। এ ক্ষেত্রে শিং ও মাগুর মাছের জন্য নিম্নহারে (Composition) খাদ্যের বিভিন্ন উপকরণ মিশিয়ে স্বল্প মূল্যে কিন্তু ভালমানের খাদ্য প্রস্ত্তত করা যেতে পারে।
ক্রমিক নং উপকরণের বিবরণ শতকরা হার
ফিশমিল ২০
সোয়বিন চূর্ণ ৮
অটোকুড়া ৩০
ভুট্টাচূর্ণ ৫
গমের ভুসি ১২
চিটাগুড়/রাব ৫
সরিষার খৈল ২০
ভিটামিন প্রিমিক্স ১ গ্রাম/কেজি
সরিষার খৈল খাদ্য প্রস্তুতের ২৪ ঘন্টা পূর্বেই পরিমাণমত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে অত:পর অন্য সব উপকরণের সাথে ভালভাবে মিশিয়ে খাদ্য প্রস্ত্ততের সময় পানি এমনভাবে মিশাতে হবে যেন খাবার অনেকটা শুকনা খাবারের মত হয়।
তথ্যসূত্রঃ আধুনিক কৃষি খামার