সার্জন পদ্ধতিতে সবজি চাষে লাভ হয় দ্বিগুণ

ভোলায় সার্জন পদ্ধতিতে বাড়ছে সবজি চাষ। চলতি বছরে ৭ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে এ পদ্ধতিতে সবজি ও মাছ চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে দুই হাজার ৭৪৩ হেক্টর জমি বেশি।

 

 

ফলে সবজির পাশাপাশি মাছ চাষ করে জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করছেন কৃষকরা। এ পদ্ধতিতে রাসয়নিক সারমুক্ত নিরাপদ প্রচুর সবজি উৎপাদন করা সম্ভব। এসব সবজির মধ্যে রয়েছে লাউ, শসা, বরবটি, করোল্লা, মিষ্টি কুমর রেখা, দুন্দল ইত্যাদি।

 

 

স্থানীয় কৃষকরা জানান, তারা ২০১৬ সালে মাত্র ৯ একর জমিতে সার্জন পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরু করেন। যা বর্তমানে ৭০ একর জমিতে পৌঁছেছে। তাদের একর প্রতি সবজি চাষে খরচ হয় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা।

 

 

আর লাভ হয় ২ লাখ ৩০ থেকে আড়াই লাখ টাকা। আর মাছ চাষে একর প্রতি আয় হয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

 

 

কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, বর্ষাকালের এ ৬ মাসে ৫০ গ্রাম ওজনের গ্লাস কার্প মাছ ছাড়লে তা ২ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। রুই ও মৃগেল ৫০ গ্রাম ছাড়লে সাড়ে ৪’শ গ্রাম হয়। এছাড়া তেলাপিয়া ও পুটি মাছ বিক্রির উপযোগী হয় ৬ মাসে।

 

 

এসব জলাশয়ে মাছের সাধারণত খাবার দিতে হয়না। বিশেষ সবজি বা ঘাসের পচা অংশ, শামুক, ছোট পোকা ইত্যাদি প্রাকৃতিক খাবারই এরা বেশি খায়।

 

 

রিয়াজ উদ্দিন জানান, সার্জনের মাধ্যমে সবজি লাগানোর স্থান উঁচু করে নেওয়া হয়। পানি বেশি বা বৃষ্টি হলেও গাছের গোড়ায় পানি জমেনা। সার্জনে ১২ মাস সবজি আবাদ করতে কোন সমস্যা হয়না।

 

 

ধান বা অনান্য ফসলের চেয়ে সবজিতে লাভ বেশি। সদর উপজেলার মধ্যে শীবপুর ইউনিয়ন, রাজাপুর, চরসামাইয়া ও ভেলুমিয়া ইউনিয়নে এ পদ্ধতি বেশি হয় বলে জানান তিনি।

 

সব মাটিতে বা সব আবহাওয়ায় সব ধরনের চাষ কার্যকর নয়। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হয়। তেমন একটি ব্যবস্থা সর্জন পদ্ধতি। যেখানকার মাটি লবণাক্ত, খরা, বন্যাক্রান্ত, জলাবদ্ধ, নিচু অনাবাদী জমি এবং যেসব জমিতে ধান চাষ করে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না সেখানে এই পদ্ধতিটি কার্যকর। তাহলে জেনে নিন এর চাষ পদ্ধতি।

 

 

আবিষ্কার

সর্জন পদ্ধতি ইন্দেনেশিয়ার একটি চাষাবাদ পদ্ধতি। সর্জন নামের ইন্দোনেশিয়ার এক ব্যক্তি প্রথম তার দেশে এ পদ্ধতিতে চাষ শরু করেন। এ পদ্ধতিতে চাষ করে তিনি সফল হন। তাই তার নামানুসারে এ পদ্ধতির নাম রাখা হয় সর্জন পদ্ধতি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এখন এ পদ্ধতি ব্যবহার হচ্ছে।

 

 

সব মাটিতে বা সব আবহাওয়ায় সব ধরনের চাষ কার্যকর নয়। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হয়। তেমন একটি ব্যবস্থা সর্জন পদ্ধতি। যেখানকার মাটি লবণাক্ত, খরা, বন্যাক্রান্ত, জলাবদ্ধ, নিচু অনাবাদী জমি এবং যেসব জমিতে ধান চাষ করে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না সেখানে এই পদ্ধতিটি কার্যকর। তাহলে জেনে নিন এর চাষ পদ্ধতি।

 

 

স্থান নির্বাচন

যেখানকার মাটিতে লবণাক্ততা বেশি। এছাড়া খরা, বন্যাক্রান্ত, জলাবদ্ধতা, নিচু অনাবাদী জমি এবং যেসব জমিতে ধান চাষ করে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে এই সর্জন পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারেন।

 

 

কী চাষ করবেন

এ পদ্ধতিতে সবজি এবং মাছ সারা বছর চাষ করতে পারবেন।

 

 

পদ্ধতি

প্রথমে জমি থেকে মাটি কেটে উঁচু করে আড়া বাঁধা হয়। আড়ার ফাঁকে নালা তৈরি করা হয়। পরে আড়ার ওপর বরবটি, শসা, করল্লা, লাউ, কুমড়া, ঝিঙা, পটল, শিম, পেঁপেসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করা যায়। আর নালাতে তেলাপিয়া, রুই, কার্পসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা যায়।

 

 

উপকারিতা

সর্জন পদ্ধতির ফলে বর্ষা মৌসুমে পানিতে আড়া ডুবাতে পারে না। ফলে তখনো এখানকার সবজি অক্ষত থাকে। আবার শুষ্ক মৌসুমে যখন চারদিক পানি থাকে না; তখন নালা থেকে পানি উঠিয়ে সবজি চাষে ব্যবহার করা যায়।