বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ উপযোগী এই সীম গাছের গোড়া থেকে ফলন শুরু হয়। বীজ বপনের ৩৫ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ফুল আসতে শুরু করে। গাছটি ঝোপালো হয় তাই ছাদে একটি খুটির সাহায্যে চাষাবাদ সম্ভব। প্রচুর ফলন হয় বিদায় এটি অত্যন্ত লাভজনক। মোটামুটি ফল আসার পর থেকে টানা ৮ মাস ফলন পাওয়া যায়।
জাতের বৈশিষ্ট সমূহঃ
আগাম জাতের সীম
সীমের রং গাঢ়ো সবুজ
মাংশ পুরু ও সুস্বাদু
রান্না করলে সীম নরম হয়ে যায়
বাজারে চাহিদা বেশি ও কেজি প্রতি ১০-১৫ টাকা বেশি।
এ জাতের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল গাছের গোড়ার প্রথম গিট থেকে শুরু করে প্রত্যেক গিটে সীম ধরে।
সীমের সাইজ ৬–৭ ইন্চি
ফুলের রং সাদা
রোগ ও পোকার আক্রমন
ভাইরাস মুক্ত
দীর্ঘ দিন ফলন দিতে থাকে।
কেরালা শিমের উচ্চ ফলন
কেরালা ১ জাতের সীম চাষের মৌসুমঃ
অতি আগাম (বৈশাখ–জৈষ্ঠ মাস)
মধ্যম (আষার মাস)
নাবি(ভাদ্র–আশ্বিন মাস)
জমি প্রস্তুত
জমিতে পানি না জমলে উচু বেড তৈরি করার দরকার নেই। যদি পানি জমে তাহলে এমন ভাবে বেড তৈরি করতে হবে যাতে সীম গাছের গোড়া পানিতে না ডুবে।
মাদার দূরুত্ব
একটা মাদা থেকে আরেকটা মাদার দুরুত্ব হবে ২–৩ হাত লাইন থেকে লাইনের দুরুত্ব হবে ৪.৫ হাত।
সার প্রয়োগ
বেড বা মাদা তৈরি হয়ে গেলে সার প্রয়োগ করতে হবে। বিঘা প্রতি টিএসপি সার ১০ কেজিএম ও পি সার ৫ কেজিবোরন সার ২ কেজি দানাদার বিষ ২ কেজিজিপসাম ১০ কেজিসবগুলো সার মিশানোর পরে তৈরিকৃত মাদাতে সমভাবে সার প্রয়োগ করতে হবে।পরবর্তীকালে উপরি সার প্রয়োগ করতে হবে।
বীজ রোপন
সার প্রয়োগের ১ সপ্তাহ পর মাটি উলটপালট করে দিতে হবে। ১৫-১৬ দিন পরে মাদাতে ৩-৪ টি সীমের বীজ রোপন করতে হবে।
আন্তপরিচর্যা
চারা বের হওয়ার পর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে কেননা এসময় পোকামাকড়ের আক্রমন বেশি হয়। পোকা আক্রান্ত হলে হাতে দমন করতে হবে আক্রমন বেশি হলে রাসায়নিক কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। পোকামাকড়ের প্রকার ভেদে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
মাচা তৈরি
সীমের গাছের লতাকে বিছিয়ে দেওয়ার জন্য মাচা তৈরি করতে হবে। মাচা দেওয়ার জন্য বাঁশ ব্যবহার করতে হবে। মাচা তৈরি করার পর সীমের গাছ বাড়তে থাকলে মাচাতে বিছায়ে দিতে।
রোগ ও পোকা দমন
এ জাতের সীমে রোগ ও পোকার আক্রমন কম। আগাম চাষ করলে পোকার আক্রমন কিছুটা বেশি হয় এ সময় লেদা পোকা গাছের পাতা খেয়ে ছিদ্র করে ফেলে। এ পোকা দমন করার জন্য সাইপারমেথ্রিন ১০ ইসি ১৬ লিটারে ২০মিলি+ এমামেকটিন বেনজয়েট ১৬ লিটারে ১০ গ্রাম হারে ব্যবহার করলে এ পোকা দমন করা যাবে। আগাম চাষের ফুলে পচন ধরতে পারে পচন দেখা মাত্রই নাটিভো ১৬ লিটারে ৫ গ্রাম / ফলিকুর ১৬ লিটারে ১৬ মিলি হারে ব্যবহার করতে হবে। যদি সীমের গাছের গোড়া পঁচে তাহলে প্রোপিকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক (১৬ লিটারের ড্রামে ২০ মিলি) দিয়ে গাছের গোড়া ভালো করে স্প্রে করে ভিজিয়ে দিতে হবে।
সীম সংগ্রহ
কেরালা শিমের আগাম ফলন
রোপনের ৫০-৬০ দিনের মধ্যে ফুল চলে আসে এবং ৮০-৯০ দিনের প্রথম ফল সংগ্রহ করা যায়। প্রথম বার সীম সংগ্রহের পর জমিতে রাসায়নিক সারের উপরি প্রয়োগ করতে হবে। বিঘা প্রতি ডিএপি ১০ কেজি ও এমওপি ৫ কেজি বোরন ১ কেজি একত্রে মিশিয়ে গাছের গোড়া থেকে ৩-৪ ইন্চি দূর দিয়ে ছিটিয়ে দিতে হবে।
ফলন
বিঘাপ্রতি (৩৩ শতকে) ফলন সর্বনিম্ন ৭০০–১০০০ কেজি।
তথ্যসূত্রঃ সাকসেস ফারমস বিডি