কিভাবে চাষ করবেন উচ্চ ফলনশীল রাস্পবেরি ফল

আমরা আজ জানব খুব ছোট একটি ফল রাস্পবেরি (Raspberry Fruit) সম্পর্কে। এটি দেখতে অনেক চমৎকার একটি ফল। বর্তমানে এই ফলটি বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে চাষ হচ্ছে। এই ফলটির পুষ্টিগুণ, এর বিভিন্ন জাত, চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হয়েছে।

 

 

বিস্তারিত জানতে রাস্পবেরি ফলের (Raspberry Fruit) বর্ণনা:

রাস্পবেরি মূলত ছোট আকারের একটি ভোজ্য ফল। আর এই ফলটি গোলাপ পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এই ফলগুলো বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। সবচেয়ে সাধারণ রাস্পবেরি হলো লাল। এছাড়াও সোনালি, কালো ও বেগুনি রঙের ফলও দেখতে পাওয়া যায়।

 

 

লাল রঙের ফলটি সবার কাছে পছন্দের এবং এটি এশিয়া এবং ইউরোপের স্থানীয়। আর এই ফলগুলো বেশিরভাগ এশিয়া এবং ইউরোপের অঞ্চলে চাষ হয়ে থাকে। এই ফলের দুটি জাতের মধ্যে একটি গ্রীষ্মকালীন এবং অন্যটি শরৎকালীন। রাস্পবেরি ফলের বৈজ্ঞানিক নাম “রুবাস আইডিয়াস”।

 

 

রাস্পবেরি ফলের স্বাদ:

বিভিন্ন স্থান ভেদে রাস্পবেরি ফলের স্বাদ ভিন্ন হয়ে থাকে। স্ট্রবেরির মতোই এটি গ্রীষ্মকালে সবার কাছে পছন্দের ফল। এই ফলটির আসল স্বাদ গ্রহন করতে হলে সংগ্রহ করার সাথে সাথেই সেটি খেতে হবে। কারন এই ফলটি সংগ্রহ করার কিছুক্ষণ পর থেকে তার আসল স্বাদ হারাতে শুরু করে। রাস্পবেরি ফলটি খেতে মিষ্টি, টক এবং সুগন্ধযুক্ত। এটি মূলত নরম মাংসযুক্ত একটি ফল।

 

 

রাস্পবেরি ফলের পুষ্টিগুণ:

রাস্পবেরি ফলটি প্রচুর খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ। এর মধ্যে আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, জৈব অ্যাসিড উল্লেখযোগ্য। আর এই উপাদানগুলো মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

 

 

রাস্পবেরি ফলে ক্যালোরির পরিমাণ খুব কম থাকে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। খাদ্য হিসাবে এই ফলটি সবার কাছে প্রিয় এবং বছরের বেশিরভাগ সময় খাওয়া হয়ে থাকে। এই ফলের বিভিন্ন খনিজসমূহ আমাদের হাড়ের গঠন, হৃৎপিন্ডের উন্নতি সাধন, ত্বক ও কোষকে উন্নত করে।

 

 

রাস্পবেরি ফলটি ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এগুলো বিপাক প্রক্রিয়াকে উন্নত করা ছাড়াও হজমের উন্নতি সাধন করে। এই ফলে থাকা অ্যাসিড মুত্রবর্ধক সমস্যার সমাধান করে থাকে এবং এই ফলের অ্যাসপিরিন মানুষের লিভারকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।

 

 

এই ফলটি আমাদের ক্লান্তি, সর্দি, তাপমাত্রা ইত্যাদির পক্ষে কার্যযকর ভূমিকা পালন করে। এটি আমাদের শরীরের ঘামের গ্রন্থিগুলোকে পরিস্কার রেখে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা কম রাখে। রাস্পবেরি ফলটি আমাদের শরীরের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে।

 

 

রাস্পবেরি ফলের অন্যান্য ব্যবহার:

রাস্পবেরি ফলটি বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যায়। এগুলো বিভিন্ন শরবত, সালাদ, পিস্তা, চকোলেট, ককটেল, টার্টস, শার্লোটস, জাম ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়। রাস্পবেরি গাছের পাতাগুলো ওষুধিভাবে ব্যবহার হয়ে থাকে। এই পাতাগুলো চা বা তাজাও ব্যবহৃত হয়।

 

 

রাস্পবেরি ফলের চাষ:

রাস্পবেরি ফলটি চাষ করার জন্য খুব বেশি প্রস্তুতি বা যত্নের প্রয়োজন হয় না গোবর সার আর মাটি হলেই হয়। এটি ফলটি গরমকালবা শীতকালে রোপন করার উপযুক্ত সময়। আর এদের জন্যশুকানো গোবর সার আর দিয়াশ মাটি প্রয়োজন হয়।

 

 

রাস্পবেরি চারাটি রোপনেরে এক বা দুই ঘন্টা আগে পানি ভিজিয়ে রাখতে হবে। গাছটি লাগানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন চারাটি 2 ইঞ্চির মতো মাটির উপরে থাকে। রাস্পবেরি ফলটি টমেটো বা বেগুনের জমিতে রোপন করা যাবে না।

 

 

আর এই গাছটি সব সময় রোদ যেখানে বেশি পরে সেখানে লাগাতে হবে , কারণ এতে করে ভার্চিলিয়াম উইল্ট এর ঝুঁকি কমবে। এই গাছটি রোপনের জন্য ৩ মাস পুরনো চারা নিশ্চায়ন করা জরুরি। রাস্পবেরি গাছটি রৌদ্দউজ্জল পরিবেশে সবচেয়ে ভালো ফসল উৎপাদন করে থাকে। প্রতি বছর এই গাছের জন্য কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করা জরুরি।

 

 

এই ফল বেশিরভাগ মৌমাছি দ্বারা পরাগায়িত হয়। রাস্পবেরি গাছটি রোপনের 1 বছরের মধ্যেই ফল উৎপাদন শুরু হয়। অল্প পরিমাণ জায়গায় এটি জন্মালে অনেক পরিমাণ ফল উৎপাদন করে থাকে। এই গাছের যথাযথ যত্ন ও জৈব সার প্রয়োগ করলে বছরের পর বছর ফল দিয়ে থাকে।

 

 

রাস্পবেরি ফলের বিভিন্ন জাত:

রাস্পবেরি চাষের জন্য বেশ কিছু ভালো মানের জাত রয়েছে। এগুলো হলো-
• রাস্পবেরি মরিচ
• রাস্পবেরি ঐতিহ্য

• রাস্পবেরি চিলকোটিন
• রাস্পবেরি নিকা

• রাস্পবেরি স্কিনা
• রাস্পবেরি নূটকা
• রাস্পবেরি উইলমেট।