কৃষিতে আগ্রহ বাড়ছে তরুণদের 

জুবের মিয়ার (২২) বাড়ী মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার মিননগড় গ্রামে। লেখাপড়া করেছেন ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত। এরপর ইলেক্টিশিয়ানের কাজ করেন। কিন্তু এই আয়ে তার সংসার চলছিল না। গ্রামের কৃষক সমিতি থেকে জানতে পারেন সরকার কৃষি কাজে প্রণোদনা দিচ্ছে।

 

 

এরপর পাঁচ বছর আগে অন্যের জমি বর্গা নিয়ে তিনি কৃষি কাজ শুরু করেন। এখন জোবের একজন সফল কৃষক। চলতি মৌসুমে তিনি ৩৭ শতক জমিতে হাইব্রিড টিয়া জাতের বোরো ধানের চাষ করেছেন। এই বীজ তিনি প্রণোদনা পেয়েছেন স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে।

 

 

জোবের জানান, ‘ফলন খুব ভাল হয়েছে। ৩৭ শতক জমি থেকে তিনি ৪০ মণ ধান পাবেন। যা এক হাজার টাকা দরে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবেন। খরচ বাদে আয় হবে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।’ তিনি বছরে দুই ফসল ধান ও অন্য জমিতে ভুট্টা চাষ করেন।

 

 

একই গ্রামের রাফু মিয়া জানান, ‘সরকারি প্রণোদনা তাদের কৃষি কাজে উৎসাহ বাড়িয়েছে। সরকার ধানের দামও অনেক বেশী দিচ্ছে। বর্তমানে অন্য কোন পেশার চেয়ে কৃষি কাজে অনেক বেশী লাভ।’

 

 

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৩২ জন তরুণকে ধান, গম ও ভুট্টার বীজ দেওয়া হয়েছে। তাদের নামে কৃষি কার্ড না থাকায় কোন প্রদর্শনী প্লট দিতে পারেনি কৃষি অফিস।

 

 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি বলেন, ‘কৃষিতে তরুণদের এগিয়ে আশা আমাদের জন্য খুবই ভাল খবর। এভাবে সারা দেশেই যদি তরুণরা কৃষি কাজে মনোনিবেশ করে তাহলে একদিন কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে।’

 

 

আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র হাটহাজারি উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানীক কর্মকর্তা ড. মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ‘তরুণদের উৎসাহকে সরকার কাজে লাগাতে পারলে দেশের কৃষি অর্থনীতীর চারা আরও বেগবান হবে। একই সাথে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান হবে। দেশে নতুন নতুর ভেরাইটি উদ্ভাবন হচ্ছে।

 

 

কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত হচ্ছে। এসব বিষয়ে তরুণদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। যাদের অর্থের যোগান নেই তাদের জন্য ব্যংক ঋণের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এছাড়াও কোন প্রডাক্টটি বাছাই করলে মার্কেট ডিমান্ড বাড়বে, প্লানিং কি হবে স্থানীয় কৃষি অফিস ও প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তরুণদের সহযোগিতা করতে হবে।’

তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন