বায়োফ্লক প্রজেক্ট করার আগে এই বিষয় গুলি বিবেচনায় রাখুন

বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জলাশয়ের দূষন নিয়ন্ত্রণ করা ও খাদ্যের খরচ কমিয়ে আনা।দূষন নিয়ন্ত্রনে রেখে খাদ্য খরচ কমাতে গেলে আবার বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যাবে। আমাদের দেশে বিদ্যুৎ খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশী। যেসব দেশে বায়োফ্লক পদ্ধতি কিছুটা সফল হয়েছে সেসকল দেশে বিদ্যুৎ খরচ আমাদের দেশের তুলনায় অনেক কম।

 

যদিও প্রযুক্তিটি নতুন তবুও তারা কিছুটা সফলতা পেয়েছে।বায়োফ্লক প্রজেক্ট করার আগে নীচের কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখুন….

 

 

১! প্রজাতি নির্বাচনঃ

প্রজাতি নির্বাচনে প্রথমত গুরুত্ব দিতে হবে যে সমস্ত কার্নিভোরাস ও ওমনিভোরাস ফিস অধিক টিডিএস সম্পন্ন দূষিত পানিতে সারভাইভ করে এবং ফ্লক ফিল্টারিংয়ের দক্ষতা আছে। যেমন -তেলাপিয়া,মাগুড় ও বাগদা চিংড়ি।ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে তেলাপিয়া, আফ্রিকান মাগুড়,কোরাল ও চিংড়ি চাষ করা হয়। যদিও আফ্রিকান মাগুড় আমাদের দেশে নিষিদ্ধ!

 

 

২! খাবার নির্বাচনঃ

বায়োফ্লক প্রজেক্টের জন্য প্রজাতি ভেদে খাবার নির্বাচন করতে হবে। এমনভাবে খাবার দিতে হবে যেন C/N Ratio মেইনটেইন করার জন্য বাড়তি সুগার যোগ করতে না হয়!খাবারে অবশ্যই অত্যাবশ্যকীয় এমাইনো এসিড ও ফ্যাটি এসিডগুলো ব্যালেন্স করে দিতে হবে।

 

 

৩! ট্যাংক বা জলাশয়ের আয়তন ও লিমনোলজিঃ

সাধারণতঃ ৫০ মেট্রিক টনের কম ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন জলাশয়ে বায়োফ্লক মাছ চাষ লাভজনক হয় না। অবশ্য শৌখিন চাষীদের কথা আলাদা।পানির গুনাগুন ও ফ্লকের পরিমান এর মত লিমনোলজিক্যাল বিষয়গুলো সম্পর্কে আপনার প্রাথমিক ধারণা থাকলেও চলবে। আপনিই একসময় আপনার জলাশয়ের জন্য স্পেশালিষ্ট হয়ে যাবেন। তাছাড়া প্রোবায়োটিক্স কোম্পানিগুলো আপনার দোড়গোড়ায় পৌছে আপনাকে এ বিষয়ে প্রচুর জ্ঞান দান করবে বলে আমি নিশ্চিত।

 

 

৪! বিবিধঃ অযথা ইউটিবার সহ ট্রেনিং সেন্টারে যাবেন না। তারা আপনাকে প্রতি ঘনমিটার পানিতে ১০০ কেজি মাছ উৎপাদনের লোভ দেখাবে। ইহা অবাস্তব! আপনি প্রতি ঘনমিটার বা ১ টন পানিতে তেলাপিয়ার উৎপাদন পাবেন ৩০/৩৫ কেজি আর বাগদা চিংড়ি ৩/৫ কেজি। ইহা সাধারণ পুকুরের তুলনায় ২৫/৩০ গুণ বেশী।

 

 

আরেকটা বিষয় দরকার সেটা হচ্ছে ধৈর্য্য! আপনাকে মেনে নিতেই হবে প্রজেক্ট লাভের মুখ দেখতে ৩ বছর পর্যন্ত সময় নিতে পারে। এটুকু সময় যাদের নাই তারা দয়া করে কষ্টার্জিত টাকাগুলো পানিতে ফেলবেন না।ব্যাংকে রেখে দিন।
মনে রাখতে হবে।বায়োফ্লক রাতারাতি পয়সা কামানোর জায়গা নয়। অতএব ভেবে চিন্তে বিনিয়োগ করুন।

 

তথ্যসূত্রঃ ময়মনসিংহ মৎস্য হ্যাচারী