সাধারণত ধানের ৪টি উপাদান থাকে। সেগুলি হল-
১। তুষ
২। কুড়া
৩। পলিশ
৪। চাল থেকে তৈরি হওয়া ব্রান
তুষঃ রাইস মিলের হলারে ধান ভাংগালে ধানের উপরের আবরণটি কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে যায়। মিলের হলারে ২ ধরনের জালি লাগানো থাকে একটা ছোটো ছিদ্র যুক্ত একটা বড় ছিদ্র যুক্ত। তুষ বড় ছিদ্র দিয়ে বের হয়ে আসে।তুষে খাদ্যগুন তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে।
কুড়াঃ মেশিনে ধান ভাঙানোর পরে তুষের নিচে আরেকটা আবরন থাকে সেই আবরন, কিছু তুষ গুড়া হয়ে যায় আর চালের উপরের দিকের কিছু আবরন উঠে এই তিনে মিলে তৈরি হয় কুড়া। এই ছোটো ছিদ্রযুক্ত জালি দিয়ে বের হয়ে আসে। এই কুড়াতেও অনেক খাদ্যগুণ আছে।
রাইস পলিশঃ রাইস মিলে ভাঙানোর পর আকাড়া চালকে ৩ থেকে ৫ টা মেশিনের ভিতর দিয়ে আসতে হয় পরিষ্কার হওয়ার জন্য। এ সময় চাল কয়েকটি স্তরে ঘসা খাওয়ানোর তার উপরের লালচে আবরন হারায় যা কিছু ভাংগা চাল সহ আলাদা হয়ে পরে আর এটাই হলো রাইস। এই রাইস পলিশ সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় এবং খাদ্যগুন রয়েছে বেশি পরিমানে।
রাইস ব্রানঃ সাধারণত মোটা চালকে চিকন করার জন্য মেশিনের মাধ্যমে ঘসে বা কেটে চিকন করা হয়। চিকন করার পর যে উচ্ছিষ্ট অংশ থাকে তাই হলো রাইস ব্রান। এটা সাধারণত বাজারে কম পাওয়া যায়। অনেক জাগায় এটাকে সিল্কি পলিশ ও বলে। রাইস ব্রানে মুলত চালের অংশই বেশি থাকে। এতেও প্রচুর খাদ্যগুন রয়েছে। গবাদিপশু মোটাতাজা করার জন্য এটি বেশ কার্যকরী।
ব্রান (ধানের/চালের কুড়া) চেনার আবেদিয়ান পদ্ধতি
অনেকেরই মনে প্রশ্ন যে, ব্রান, রাইস পালিশ এবং তুষ মিশ্রিত ব্রান চেনার উপায় কি?
আপনাদের জানার জন্য নীচে তিনটা পদ্ধতি জানাচ্ছি; প্রয়োগ করে এবং চর্চা করে এ ব্যাপারে নিজেকে একটু হলেও এগিয়ে নিতে পারবেন আশা করি।
১) এক মুঠো স্যাম্পল নিয়ে কাচের গ্লাসে পানি নিয়ে তাতে ছেড়ে দিয়ে চামচ দিয়ে আস্তে ঘাটতে থাকবেন! রাইস পালিশ হলে নীচের দিকে চালের গুড়া নামতে থাকবে! এটার বস্তা (৫০ কেজি) ৮০০-১০০০/- টাকা চাইবে!
২) আর চামচ দিয়ে ঘাটতে থাকলে যদি না নামে তাহলে ব্রান হবার সম্ভাবনা। এটার ৫০ কেজির বস্তার দাম ১২০০-১৩০০ টাকা চাইবে।
৩) আর একটা হতে পারে- ব্রান ভাসছে অথচ দাম কম চাইছে-
সেক্ষেত্রে ভেজানো ব্রান একটা বাটিতে নামিয়ে নিয়ে হাতে কচলাতে থাকবেন। যদি কচলানোর পর মুঠ বেধে ধরার চেষ্টা করবেন। যদি মুঠোর মধ্যে কিছু পান তাহলে বুঝবেন এটাতে তুষ আছে! এখন ভেজানো ব্রান থেকে হাতের মুঠোয় আসা মাল আন্দাজ করে মেশানো তুষের অনুপাত আন্দাজ করতে হবে।
তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশের কৃষি (ফেসবুক পেজ)