রঙিন মাছ চাষ করে আজ সফল রাজশাহীর ফয়সাল

রাজশাহীতে রঙিন মাছ চাষে শিক্ষার্থী ফয়সালের সাফল্য এসেছে। রাজশাহীর বাঘায় রঙিন মাছের চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ঐ শিক্ষার্থী। তিনি ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এমএসসির ছাত্র। তিনি প্রায় এক বছর যাবত রঙিন মাছ চাষ করছেন। এই মাছ চাষ করেই পেয়েছেন সফলতা। তিনি স্বপ্ন দেখেছেন বড় একটি খামার করার।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তরুণ উদ্যোক্তা ওয়াসেক ফয়সালের বাড়ির আঙিনায় ছোট ছোট প্লাস্টিক, মাটির পাত্র, ইট দিয়ে তৈরি চৌবাচ্চায় রাখা পানিতে ভাসছে নানা রঙের রঙিন মাছ। এর মধ্যে লাল, নীল, কমলা, কালো, বাদামি, হলুদ রঙের মাছের ছড়াছড়ি। গোল্ড ফিশ, গাপ্পি, বিভিন্ন রঙের চিংড়ি, রেড ক্যাপ, মলি, বেলুন মলি এছাড়াও অনেক ধরনের মাছ।

 

ওয়াসেক ফয়সাল বলেন, ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে বাড়ির আঙিনায় ছোট্ট পরিসরে গড়ে তোলেন একটি ফিশ ফার্ম। পোনা কেনা, খাবার দেয়াসহ নানা কাজে তার প্রথমে খরচ হয়েছিল ৪ হাজার টাকা। বছর ঘুরতেই মাছ বিক্রি করেছেন প্রায় ৮০ হাজার টাকার। ইতোমধ্যেই ব্যবসা আরেকটু সম্প্রসারিত করেন।

 

তিনি আর বলেন, অ্যাকুরিয়ামের দোকানে রঙিন মাছ দেখে ভীষণ ভালো লাগে তার। কৌতূহলী হয়ে মাছের দাম জানতে চান। জানতে পারেন মাছগুলো বেশ দামি। রঙিন মাছগুলো বিদেশ থেকে আনা হয়। বর্তমানে দেশে এ মাছের চাষ হচ্ছে। সেখান থেকেই রঙিন মাছ চাষের পরিকল্পনা মাথায় আসে।

 

ওয়াসেক ফয়সাল আরও জানান, চলতি মাসের শুরুতে তিনি ছয়টি চৌবাচ্চার পাশাপাশি আরও কিছু নতুন চৌবাচ্চা তৈরি করে মাছের চাষ করছেন। যেখানে তিনি দেড় শতাধিক মা মাছ আর অর্ধশতাধিক পুরুষ মাছ ছেড়েছেন। তিন থেকে চার মাসের মধ্যে এগুলো বড় হবে। তখন চৌবাচ্চায় দিয়ে ডিম ফোটাবেন। তারপর রেণু বিক্রি করবেন।

 

ফয়সালের মা ফরিদা বেগম বলেন, শুরুতে এলাকার মানুষসহ অনেক বন্ধুরাও এই চাষ দেখে হাসাহাসি করতেন এবং বিভিন্নভাবে মজা করতেন। সবাই মনে করতেন এটা খেয়ালিপনা কিন্তু হাল ছাড়িনি। এখন এলাকার মানুষ ছাড়াও মৎস্য কর্মকর্তারা এই মাছ দেখতে আসছেন। অনেকে খামার দেখতে এসে মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

 

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থী ফয়সাল রঙিন মাছ চাষে সফল হওয়ায় আমরা বেশ খুশি। এই মাছ চাষে সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ ও সহজ ঋণের ব্যবস্থা থাকলে আরও ভালো করতে পারত ফয়সাল। সঠিক পরিচর্যা থাকলে এই খামার জীবনকে বদলে দেবে ফয়সালের। আরও যারা এ মাছের চাষ করতে চান আমরা তাদের সহযোগিতা করবো।

তথ্যসূত্রঃ জাগো নিউজ ২৪