বারি লাউ চাষ করে স্বাবলম্বী কৃষিপ্রেমিক শামীম, জানুন আপনি কিভাবে শুরু করবেন

শীতকালীন সবজি হিসাবে এক সময় পরিচিত ছিল এই লাউ। কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় সারা বছরই পাওয়া যায় লাউ। বাঙালির খাদ্যতালিকায় লাউয়ের বেশ কদর রয়েছে। অনেক কিছু দিয়েই লাউ রান্না করা যায়। ছোট চিংড়ি দিয়ে রান্না করা লাউ দারুণ মজার তরকারি হিসেবে সবাই পছন্দ করে। খনার বচনেও আছে লাউয়ের বন্দনা। লাউ নিয়ে গান গেয়ে বাউলরা লাউয়ের প্রতি তাদের ভালোবাসাও প্রকাশ করেছেন।

 

দেশের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চল লবণাক্ত। এ কারণে চাষাবাদ খুব কষ্টসাধ্য। তার পরও থেমে যায়নি কৃষিপ্রেমিক শামীম আহসান। তিনি বিভিন্ন শাক-সবজির পাশাপাশি লাউ চাষ শুরু করেছেন। যশোরে একটি ইনস্টিটিউট বারি লাউ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এ বিশেষ জাতের লাউ চাষিদের কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। এজন্য একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে যশোরের একটি সংস্থা।

 

শুরু থেকেই বারি লাউয়ের প্রতি মুগ্ধ হয়েছেন চাষি শামীম আহসান। বাগেরহাট জেলার মোংলা পোর্ট পৌরসভার পিকনিক কর্নারে মোংলা বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে মাত্র পাঁচ কাঠা জমিতে এর চাষ করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে পাঁচ কাঠা জমির লাউ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।

 

অন্যদিকে লাউয়ের শাক ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। সব মিলিয়ে তার খরচ হয়েছে চার হাজার টাকা। শামীম আহসান বলেন, ‘আমি এ লাউ চাষ নিয়ে ব্যাপক আশাবাদী। এটি চাষ করে আমি লাভবান হয়েছি। পুরো বছর চাষযোগ্য এ লাউয়ে রোগবালাইয়ের সমস্যা কম। এখন পর্যন্ত তেমন কোনো কীটনাশক ব্যবহার করিনি। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার পরও কোনো চাকরি না করে কৃষি পেশার সাথে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত।’

 

বাণিজ্যিকভাবে লাউ চাষ করে ভালো লাভ করা যায়। এ কথা আগে জানলেও এই লবণাক্ত এলাকায় কীভাবে লাউয়ের চাষ করবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। মোংলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনিমেষ বালার লাউ চাষের পরামর্শে তিনি লাভবান হয়েছেন।

 

বারি লাউ নিয়ে মোংলা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা অনিমেষ বালা বলেন, দক্ষিণাঞ্চল যেহেতু লবণাক্ত এলাকা। এ উপকূলীয় এলাকায় কীভাবে লাউয়ের চাষ করা যায় সে বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছি। লাউ চাষে যদি কোনো কৃষক আগ্রহ পোষণ করে তাহলে তাকেও পরামর্শ দেয়া হবে। সাধারণ জাতের লাউয়ের সঙ্গে এর অনেক পার্থক্য রয়েছে।

 

লাউ চাষে কৃত্রিম পরাগায়নের প্রয়োজন হয় না। সাধারণ লাউয়ের তুলনায় বারি লাউয়ের ফলনও প্রায় দ্বিগুণ। এক একটির ওজনও বেশি। এর রঙ গাঢ় সবুজ এবং আকর্ষণীয়। স্বাদও ভালো। বিচি কম ও খাদ্যাংশ পুরু। কচি লাউ ছোলাসহ খাওয়া যায়। এ লাউ মাচায় ভালো ফলে। বাণিজ্যিকভিত্তিতে এ লাউ চাষ করা বেশ লাভজনক।

 

মোংলা পৌর শহরের চাষি শামীম আহসান বলেন, আমি আমার মেধা এবং প্রাকটিক্যাল শিক্ষা থেকে লাউয় চাষে ইচ্ছা পোষণ করি। এই লাউ চাষে আমি এখন লাভবান। মোংলা উপজেলার কৃষিপ্রেমীদের জন্য বারি লাউ সঠিক পদ্ধতিতে বীজ রোপণ উৎপাদন সবকিছু মিলিয়ে কৃষকরা লাভবান হতে পারেন। আমার এ কৃষিকাজে যারা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।

তথ্যসূত্রঃ জাগো নিউজ ২৪